বাংলাদেশের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ বিগত সরকারের সাত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তদন্তের আওতায় আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য, সাবেক বিচারপতি, সাবেক সচিব, আইজিপি, সেনা কর্মকর্তাসহ ২২ বিশিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়াটি শুরু করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা), যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেটের তথ্য পুনঃপরীক্ষা করা হবে। তদন্তের ফলস্বরূপ, যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তাদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেট বাতিল করা হবে।
জামুকা সূত্রে জানা গেছে, এই ২২ ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেনসহ আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি রয়েছেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক ও অন্যান্যদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যখন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করা হয়, তখন মোজাম্মেল হকের নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। পরে ২০২৩ সালে জামুকার সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের মহাসচিব খ ম আমীর আলী রিট পিটিশন করেন এবং আদালত এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় জানা যায়, ভারতে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৫১ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আ ক ম মোজাম্মেল হকের নাম নেই। এমনকি ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত লাল মুক্তিবার্তার ভলিউমেও তার নাম ছিল না, পরে তা ঘষামাজা করে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
এই বিতর্কিত তালিকায় আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি রয়েছেন, যেমন:
এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি এখন মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। যাদের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল হওয়ার পাশাপাশি আইনগত পদক্ষেপও গ্রহণ করা হতে পারে।
সূত্র:কালের কন্ঠ