বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের আওতায় আওয়ামী লীগের পক্ষে বা সমর্থনে যেকোনো ধরনের প্রচার, সংবাদ প্রকাশ, জনসমাবেশ, বক্তৃতা, মিছিল বা সভা-সমাবেশও পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী, এই নিষেধাজ্ঞা কেবল দলটির সরাসরি কার্যকলাপে সীমাবদ্ধ নয়, বরং মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য মাধ্যমেও এর পক্ষে প্রকাশিত যেকোনো বিবৃতি বা তথ্য প্রচার দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ‘সত্তা’ শব্দটি এখানে রাজনৈতিক দলকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। পূর্ববর্তী আইনে রাজনৈতিক দলের সম্পদ জব্দ ও কার্যালয় বন্ধ করার বিধান থাকলেও, সংশোধিত অধ্যাদেশে সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একটি দলের পক্ষে কোনো ধরনের প্রচারণা, এমনকি সংবাদ মাধ্যমেও তা প্রচার, প্রকাশ বা মুদ্রণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সংশোধিত আইন অনুসারে, গণমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত দল বা সত্তার পক্ষে সংবাদ প্রচার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই অপরাধের জন্য দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এই অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আইনটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে এবং এর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া আসে, তা এখন জাতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে।