বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনার মধ্যে দিয়ে দেশে বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হতে পারে ‘শক্তি’, যার নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা।
মোস্তফা কামাল পলাশ রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী ২৭ বা ২৮ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূল ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এটি যদি ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে বাতাস উৎপন্ন করে, তবে তাকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। অন্যথায় বাতাসের গতির ওপর ভিত্তি করে এটিকে লঘুচাপ, নিম্নচাপ বা গভীর নিম্নচাপ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
গবেষকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২৯, ৩০ ও ৩১ মে—এই তিনদিন রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে হতে পারে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই তিনদিনে এসব অঞ্চলে ৫০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেক বেশি এবং বিপজ্জনক।
ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও একই সময়ে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বা গভীর নিম্নচাপটি উপকূলের কোন অংশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে, তার ওপর নির্ভর করবে কোন বিভাগ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমীবায়ু ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং এটি আরও বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ২৭ মে নাগাদ উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের কিছু এলাকায় নদীভাঙন, পাহাড়ধস, জলাবদ্ধতা এবং ফসলহানির ঝুঁকি রয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণের প্রতি এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই এখনই জরুরি পূর্বপ্রস্তুতি, সচেতনতা এবং নিয়মিত আবহাওয়ার আপডেট অনুসরণ করা। ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ বাস্তবে রূপ নিলে, এটি হতে পারে চলতি মৌসুমের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারকারী জলবায়ুগত ঘটনা।