ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারে ছাত্রদলের প্রস্তাবনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন।
ফরহাদ বলেন, “ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী ‘নারী ও সমতা বিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক’ পদ সৃষ্টির যৌক্তিক প্রস্তাব আমরা উত্থাপন করেছিলাম। অথচ ছাত্রদলের অনেক নতুন পদ গৃহীত হলেও, এই সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো উপেক্ষিত হয়েছে।”
ডাকসুর নিয়মিত নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংসদের মেয়াদ শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আহ্বান জানায় ছাত্রশিবির। ফরহাদ বলেন, “এটি অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয় ছিল, কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীরা চায় রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। সে লক্ষ্যে ডাকসুতে অংশগ্রহণের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ হতো। এর মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসত, আর ‘ইয়ার ড্রপ’ দিয়ে নেতা হওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করা যেত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠনকে সুবিধা দিতেই এই বয়সসীমার বিধান বাদ দিয়েছে।”
ফরহাদ বলেন, “পাঠাগার, পাঠকক্ষ ও কমনরুম বিষয়ক সম্পাদক এবং ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক— এই দুটি আলাদা পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। কারণ, শিক্ষার্থীদের পুষ্টিমান ও স্বাস্থ্যসেবা এবং গবেষণাবান্ধব পরিবেশ—দুই ক্ষেত্রেই আলাদা মনোযোগ প্রয়োজন। কিন্তু এবারও দুটি ভিন্ন প্রকৃতির বিষয়কে একই সম্পাদকের অধীনে রাখা হয়েছে।”
নির্বাচন কমিশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ঢাবি শিবির সভাপতি। “কমিশনের গঠনে একটি নির্দিষ্ট শিক্ষক সংগঠনের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে। এতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া, কমিশন গঠনের এতদিন পরও কোনো রোডম্যাপ প্রকাশ না হওয়াটা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
ফরহাদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ অচলায়তন ভাঙার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা আশাবাদী—প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট সংস্কার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”
তিনি সতর্ক করেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে কিনা—এ প্রশ্ন এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যেও উঠছে।”