গত জানুয়ারি থেকে সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করার পরিকল্পনা করেছিল এবং সে অনুযায়ী কিছু উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে সংকটকালীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অর্থনীতিবিদরা এই উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করলে তখন সরকার মহার্ঘ ভাতা দেওয়া থেকে সরে আসে। কিন্তু বর্তমানে আবারো এই ভাতা চালুর নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গ্রেডভিত্তিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভাতা প্রদানের সুপারিশ করে। যদিও তখন সরকার পিছিয়ে আসেছিল, এবার সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং এর জন্য আগামী অর্থবছরের অতিরিক্ত খরচের হিসাব-নিকাশ করছে।
সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে অর্থ উপদেষ্টা জনপ্রশাসন সংক্রান্ত কমিটির প্রধান হিসেবে বিষয়টি উপস্থাপন করবেন। ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগ একটি খসড়া প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে।
তবে খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা হলে সরকারি চাকরিজীবীরা অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাবেন না।
বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন। তাদের মধ্যে, মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী বাজেটে অতিরিক্ত প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া, অর্থ বিভাগের খসড়ায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ এবং ১ম থেকে ১০ম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য ১০ বা ১৫ শতাংশ ভাতা প্রদানের বিকল্পও রয়েছে। ১ম থেকে ১০ম গ্রেডে ১০ শতাংশ ভাতা দিলে ৬ হাজার কোটি টাকা এবং ১৫ শতাংশ হলে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় প্রয়োজন হবে।
চলতি অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ ছিল ৮২,৯৯০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১০.৪১ শতাংশ। তবে গত সরকারের সময় বৈষম্যের শিকার চাকরিজীবীদের কয়েক দফায় পদোন্নতির ফলে সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ বেড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।