দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও উন্মুক্ত হলো বাংলাদেশের জন্য। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১২ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার শ্রমিক বিনা খরচে পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত তালিকার ভিত্তিতে বিনা খরচে শ্রমিক পাঠানো হবে। এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে মালয়েশিয়ার পুত্রজয়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাশুসন ইসমাইল ও মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ার সঙ্গে যৌথ বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এর আগে গত বছর ৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে শ্রমবাজার, ভিসা সহজীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বহু ইস্যুতে আলোচনা হয়।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, “দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চাই। রোহিঙ্গা সংকট, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর হবে।”
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “বাংলাদেশের শ্রমিকরা আধুনিক দাস নয়। তাদের মর্যাদা রক্ষায় আমরা সচেষ্ট। বন্ধ শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে বন্ধুকে দেওয়া কথা রাখছি।”
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, শ্রমিকদের সুরক্ষা, অভিবাসন ব্যয় কমানো এবং নিরাপদ অভিবাসনের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।
কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশ বছরে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেতে পারে।
তাদের মতে, এই বৃহৎ শ্রমবাজার খুললে একদিকে যেমন অভিবাসী শ্রমিকদের ভাগ্য ফেরার সুযোগ তৈরি হবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিও বড়ভাবে উপকৃত হবে। এখন শুধু প্রয়োজন স্বচ্ছ, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল অভিবাসন ব্যবস্থার বাস্তবায়ন।
সূত্র:যুগাস্তর