শনিবার (৩ মে) ভারতের গণমাধ্যম আজতক বাংলা একটি ভিডিও প্রতিবেদনে একটি ছবি দেখিয়ে দাবি করে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যাদের হ্যান্ডশেক করতে দেখা যাচ্ছে, তারা সেনা কর্মকর্তা। উপস্থাপক বলেন, ছবিতে থাকা ব্যক্তিদের পোশাক দেখে মনে হয় না তারা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্য; বরং তাদের পোশাক দেখে মনে হচ্ছে তারা অন্য কোনো দেশের, সম্ভবত পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তা।
রিউমর স্ক্যানার টিম এই দাবি যাচাই করে দেখতে পায়, ছবিটি আসলে ২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একটি মুহূর্ত। ছবিতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা কেউই সেনা কর্মকর্তা নন। বরং সবাই বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন শাখার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং পুলিশ সদস্যদের পদক প্রদান করেন। সেই সময়ই ছবিটি তোলা হয়।
এই ছবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়—ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ, পিপিএম, ড. ইউনূসের কাছ থেকে “বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম-সেবা)” গ্রহণ করেন। একই রকম পোশাকে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমসহ অন্যরাও।
ছবিতে দেখা পোশাকটি আসলে বাংলাদেশ পুলিশের সেরিমনিয়াল ইউনিফর্ম, যা “সামার টিউনিক” নামে পরিচিত। এই পোশাক পুলিশ সপ্তাহ, কুচকাওয়াজ বা বিশেষ আনুষ্ঠানিক প্রেক্ষাপটে পরিধান করা হয়। পুলিশের মিডিয়া বিভাগের এআইজি এনামুল হক সাগরও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি পুলিশের নিয়মিত সেরিমনিয়াল পোশাক এবং সবাই বাংলাদেশ পুলিশেরই সদস্য।
আজতক বাংলার প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য ছিল বিভ্রান্তিকর ও গুজবপ্রসূত। এতে স্পষ্টতই কোনো তথ্য যাচাই করা হয়নি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ড. ইউনূস ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে ভুল প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করার এই প্রচেষ্টা সাংবাদিকতার ন্যূনতম নৈতিকতারও পরিপন্থী। এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও ভুল বার্তা পৌঁছাতে পারে।