খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস। আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এই এক দফা দাবি ঘোষণা করে জানান, বর্তমান ভিসি কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তার অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়।
ঘোষণার পরপরই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলে তালা খুলে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেয় এবং খান জাহান আলী হলসহ ছয়টি আবাসিক হলের তালা ভেঙে ফেলে। এর আগে দুপুরে ক্যাম্পাসের 'দুর্বার বাংলা' ভাস্কর্যের পাদদেশে 'মেক কুয়েট, ফ্রি এগেইন' ব্যানারে এক সমাবেশে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
ঘোষণাপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, “যেহেতু উপাচার্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও বহিষ্কারে ইন্ধন দিয়েছেন, হল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়েছেন এবং কোনো দায়িত্ব স্বীকার করেননি—তাই আমরা ছয় দফা থেকে এক দফায় এসেছি। একমাত্র দাবি—উপাচার্যের অপসারণ।”
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বহিষ্কৃত ৩৭ জন শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশের দাবিও জানান। তাঁরা বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের না ধরে বরং প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের একজন জানান, “তিন দিন ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর অবস্থায় আছি। সহ্যশক্তির সীমা পেরিয়ে গেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিচার চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন নাটক করেছে।”
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা এবং আগামী ২ মে থেকে হল ও ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারির ছাত্ররাজনীতি বিরোধী আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
তালা ভাঙার বিষয়ে কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, “আমি আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো জোর করিনি। তবে তালা ভাঙার কাজ বেআইনি। বিষয়টি সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করব, সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।”
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না