পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা চূড়ান্ত করেছেন। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনী তাদের ১২ দফা দাবি উত্থাপন করবে, যার মধ্যে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দাবিও রয়েছে। ২৯ এপ্রিল থেকে তিনদিন ব্যাপী শুরু হতে যাওয়া পুলিশ সপ্তাহের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বছর, পুলিশ সপ্তাহ পূর্ববর্তী বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণ হবে না। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে কুচকাওয়াজ এবং রাষ্ট্রপতির সাথে কোনো বৈঠক হবে না। শিল্ড প্যারেড এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতা বাতিল করা হয়েছে। সাধারণত জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হলেও, এবারের পরিস্থিতির কারণে এটি এপ্রিলের শেষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর জানান, এই বছর পুলিশ সপ্তাহের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশ বাহিনীর দাবিগুলির বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশেষত, ১৩তম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা এবং নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পুলিশের ১২ দফা দাবি: ১. স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন: পুলিশের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা উচিত, যা অভিযোগ সেল এবং পুলিশের সদস্যদের জন্য অভিযোগ প্রতিকার কমিটি পরিচালনা করবে। ২. এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ভাতা প্রবর্তন। ৩. পুলিশের গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি। ৪. মৃত কর্মীদের দাফন বা দাহ করার জন্য আর্থিক বরাদ্দ প্রদান। ৫. অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আধুনিক সাইবার ইউনিট প্রতিষ্ঠা। ৬. জনবল বৃদ্ধি ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ। ৭. একটি পুলিশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা। ৮. নারী-বান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরি। ৯. পরিবেশগত আইন প্রয়োগে পুলিশের ভূমিকা বৃদ্ধি। ১০. অন্তর্ভুক্তিমূলক আইন বা নীতি প্রবর্তন। ১১. পুলিশ বাহিনীতে আরও আধুনিক অস্ত্র সরবরাহ। ১২. পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি পৃথক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা।
এছাড়া, এবারের পুলিশ সপ্তাহের শেষে পুলিশ কর্মকর্তারা ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন, যেখানে তারা পুলিশের ভূমিকা এবং জনগণের প্রত্যাশা সম্পর্কে আলোচনা করবেন।
পদকপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম: এ বছর বিপিএম (বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল) এবং পিপিএম (প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল) পদক পাচ্ছেন ৬২ জন পুলিশ কর্মকর্তা, যার মধ্যে সাবেক আইজিপি মইনুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহীদুর রহমান, বিভিন্ন ডিআইজি, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এবং আরও অনেক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা রয়েছেন।
সূত্র:ইত্তেফাক