বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিবিহীন মুদ্রা বাজারে ছাড়তে যাচ্ছে। ঈদুল আজহার পরপরই ধাপে ধাপে এই নতুন নোটগুলো বাজারে আসবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
নতুন মুদ্রায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির জায়গায় থাকছে জাতীয় ইতিহাস ও স্থাপত্য নিদর্শনের প্রতিচ্ছবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—২০ টাকার নোটে কান্তজিউ মন্দির ও বৌদ্ধমন্দির, ৫০ টাকায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের চিত্র ও আতিয়া মসজিদ, এবং ১০০০ টাকায় বঙ্গভবন ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এসব নোট ২৭ মে, ৩০ মে ও ২ জুন যথাক্রমে বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে নতুন ৫ টাকার নোটের একটি সম্ভাব্য নকশা, যেখানে দেখা যাচ্ছে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী দুই কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধের প্রতিকৃতি।
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে মতামত প্রকাশ করেছেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুহাম্মদ ইশরাক। তিনি লিখেছেন,
"কিন্তু দেশের জন্য জীবন দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়ংকরতম ফ্যাসিবাদের একটার পতন ঘটানো আবু সাঈদের ছবি ব্যাংক নোটে আমাদের সহ্য হয় না। অথচ আবু সাঈদ একজন কৃষকের ছেলে। এই ছেলেটার ফার্স্ট জেনারেশন গ্র্যাজুয়েট হওয়ার কথা ছিল। রাষ্ট্র কবে এর আগে এভাবে একজন কৃষকের ছেলেকে শ্রদ্ধা করেছে?"
নোটে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতি নিয়ে কিছু মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এটি কি রাজনৈতিক প্রতীকচিহ্ন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা, নাকি ঐতিহাসিক বিকল্প স্মৃতি নির্মাণের সূচনা?
অন্যদিকে, স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা অপরাপর বীরদের সম্মানিত করাকে অনেকেই ইতিবাচক বলেও দেখছেন। বিশেষ করে কিশোর বীর শহীদদের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা অনেকের মতে একটি "জনগণের সাথে যুক্ত স্বীকৃতি সংস্কৃতি" গঠনে সহায়ক হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপ থেকে মুদ্রণ কাগজ সরবরাহে বিলম্বের কারণে ৫ টাকার নোট ঈদের পরে বাজারে আসবে। নোটগুলোর নকশা ও নিরাপত্তা ফিচার আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র:কালেরকন্ঠ