অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে ধর্মবিরোধী, অসাংবিধানিক ও সমাজবিরোধী আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের বিভিন্ন ধর্ম ও শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। তারা কমিশনের রিপোর্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সর্বধর্মীয় সংবাদ সম্মেলনে এই দাবির পক্ষে বক্তব্য দেন বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কাওসার হোসাইন।
বক্তারা বলেন, এই কমিশনের প্রস্তাবনা বাংলাদেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক রীতিনীতি এবং সাংবিধানিক ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা অভিযোগ করেন, কমিশনের মাধ্যমে কিছু এনজিওপন্থী ও পশ্চিমা চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত ব্যক্তি তাঁদের মতবাদ জোরপূর্বক সমাজে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল কারীম আবরার বলেন, “এই রিপোর্ট ইসলামের পারিবারিক বিধানের বিরোধিতা করছে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে। এটি জনবিচ্ছিন্ন, সাংবিধানিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর।”
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি. কস্টা বলেন, “প্রস্তাবিত সিভিল ল’ ধর্মীয় রীতিনীতিকে খণ্ডিত করছে। এটি খ্রিস্টান ধর্মীয় স্বাধীনতাকেও চ্যালেঞ্জ করছে।”
জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল জানান, “এই রিপোর্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের পারিবারিক আইনে হস্তক্ষেপ করছে। এটি পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনে তৈরি এবং ধর্মহীনতা চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, “এই কমিশন আসলে একটি পুরুষবিদ্বেষী ও ধর্মবিদ্বেষী গোষ্ঠীর কল্পিত প্রস্তাবনার সংকলন। তারা সামাজিক কাঠামো ভেঙে দিতে চায়।”
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট কাওসার হোসাইন বলেন, “এই রিপোর্টে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় চেতনা, সংস্কৃতি ও পারিবারিক কাঠামোকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। এটি জনবিচ্ছিন্ন, পক্ষপাতদুষ্ট ও সামাজিক ঐক্যের জন্য হুমকি।”
বক্তারা আরও বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে নারীবিষয়ক যেকোনো কমিশন গঠনে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তারা।
সূত্র:প্রথম আলো