নতুন বোরো ধানের সরবরাহ শুরু হওয়ায় দীর্ঘ সময় পর দেশের চালের বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। বিশেষ করে মিনিকেট চালের দাম কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত কমেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন মিনিকেট চাল ৭৪ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে পুরোনো মিনিকেটের দাম ৭৮ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা জানান, প্রতি বস্তা (২৫ কেজি) চালের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে, যা আগে ২২০০ টাকায় উঠেছিল, এখন তা ২০০০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে।
তবে চালের বাজারে এই স্বস্তি থাকলেও সবজির বাজারে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হলেও গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনও পর্যাপ্ত হয়নি। ফলে সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেশি। ঢ্যাঁড়শ, পটোল, ঝিঙা, করলা, বরবটি, বেগুন, কাঁকরোল ও চিচিঙ্গার মতো সবজি ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। সজনে ডাটার দাম আরও বেশি—১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এমনকি সাধারণত কম দামে বিক্রি হওয়া পেঁপেও এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও ক্রেতাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। নদীতে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ থাকায় এবং চাষের মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে প্রায় সব মাছের। ইলিশ মাছের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে—৭০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়, এক কেজির বেশি ওজনের প্রতিটি ইলিশের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। মাঝারি আকারের ইলিশও ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিংড়ির দামও আকাশছোঁয়া—চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ এবং নদীর চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কই, শিং, ট্যাংরা, শোল, পুঁটি, এমনকি চাষের রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাঙাশের দামেও ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৪০, আর পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
পেঁয়াজের বাজারেও তেমন স্বস্তি নেই। ঈদের পর থেকেই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় স্থির হয়ে আছে। পাড়া-মহল্লায় এর দাম আরও ৫ টাকা বেশি।
তবে মুরগি ও ডিমের বাজারে তুলনামূলক স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়, আর সোনালি জাতের মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়। ডিমের দামও গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে।
চালের বাজারে কিছুটা স্বস্তি এলেও সবজি ও মাছের চড়া দামে সাধারণ ক্রেতাদের ভোগান্তি বাড়ছে। বাজার স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিক্রেতারা।
সংগৃহিত প্রতিবেদন