দক্ষিণ কোরিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী লি জে-মিয়ং বিজয়ী হয়েছেন। গত ডিসেম্বর সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন জারি ও তার পরবর্তী পদত্যাগের পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ন্যাশনাল ইলেকশন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, শতভাগ ভোট গণনা শেষে লির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৯.৪২ শতাংশ, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির কিম মুন-সুর ভোট ছিল ৪১.১৫ শতাংশ।
নিজের বাড়ির বাইরে সংবাদ সম্মেলনে লি জে-মিয়ং ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমার প্রতি যারা বিশ্বাস রেখেছেন, তাদের আশা পূরণে আমি সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো। দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখা হবে আমার প্রধান কর্তব্য।”
৬১ বছর বয়সী লি বুধবার (৪ জুন) দক্ষিণ কোরিয়ার ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট একবারের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন এবং পুনর্নির্বাচনের সুযোগ নেই।
রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা কিম মুন-সু, যিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ঘনিষ্ঠ, নির্বাচনে লির কাছে পরাজিত হন। ইউন গত এপ্রিল মাসে সামরিক আইন জারি করে অভিশংসিত হন এবং পদত্যাগ করেন, যা দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
এ নির্বাচনে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন, যা ১৯৯৭ সালের পর সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি বলে জানা গেছে।
লি জে-মিয়ং দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংগি প্রদেশের সাবেক গভর্নর এবং সিউলের কাছাকাছি সঙনাম শহরের সাবেক মেয়র। মানবাধিকার আইনজীবী থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত এই নেতা তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করলেন।
তিনি সামরিক আইন জারি করার বিরোধিতা করে সেই সময় সরাসরি সম্প্রচার করে বিক্ষোভকে সমর্থন দেন এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমালোচকরা তাকে ‘জনতাবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও, লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতা এবং সিউল-ওয়াশিংটন-টোকিও অংশীদারিত্বকে দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
লি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সংলাপ পুনরায় শুরু, সামরিক হটলাইন চালু এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনার পুনরুজ্জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানো এবং কর্মক্ষেত্রে চাপ হ্রাসে সাড়ে চার দিন কর্মসপ্তাহ চালুর পক্ষে মত দিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি দুর্নীতি ও অন্যান্য মামলার মুখোমুখি হলেও এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
লি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে নতুন দিক নির্দেশনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামরিক আইন জারি ও তার পরবর্তী ঘটনাসমূহের কারণে নির্বাচন ঐতিহাসিক গুরুত্ব পেয়েছে।
লি বুধবার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং দেশের ঐক্য ও স্থিতিশীলতার পথে কাজ শুরু করবেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই