সাতক্ষীরা জেলার বৈচনা গ্রামের এক বাসিন্দা মো. ওবায়দুল্যাহ ২০১৪ সালে তার বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব নাজমুল আহসান ও সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সোমবার (২৬ মে) দাখিল হওয়া মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. মায়নুদ্দিন ইসলাম অভিযোগটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী, সাতক্ষীরা জেলা বারের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন:
“২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি, তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে, বাদীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিষয়টি তৎকালীন প্রশাসনের নেতৃত্বেই সংঘটিত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পুলিশ তখন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওবায়দুল্যাহ।”
মামলার বাদী ওবায়দুল্যাহ বলেন:
“আমার বাড়িঘর আওয়ামী সরকারের পেটুয়া বাহিনী বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। নেতৃত্বে ছিলেন সেই সময়ের ডিসি নাজমুল আহসান। আজও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন, এমনকি এখন কেন্দ্রীয় সচিব পদে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন:
“নাজমুল আহসানের সময়ে সাতক্ষীরা জেলায় রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছিলেন। এর মধ্যে ২৭ জন যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হন। এদের সবাই ছিলেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের কর্মী।”
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এখন পালিয়ে গেলেও যারা মাটিতে রক্ত ঝরিয়েছেন, তারা এখনও প্রভাবশালী পদে বহাল আছেন। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় সাতক্ষীরা ছিল সংঘর্ষ ও অভিযানের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বহু রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন, বহু বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ ওঠে।
এই মামলা সেই সময়কার একটি আলোচিত ঘটনার পুনরুত্থান এবং সম্ভবত আরও অনেক ভুক্তভোগীর জন্য বিচার দাবি করার পথ উন্মুক্ত করতে পারে।
এই মামলা নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রশাসনের ভূমিকা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ নজির হতে পারে। একইসঙ্গে এটি ২০১৪ সালের সহিংস রাজনৈতিক ইতিহাসের বিচারিক পুনর্মূল্যায়নের সূচনা বলেও মনে করছেন অনেকে।
সূত্র:কালবেলা
৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হন বলে বিবিসি আই- এর একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে
গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনে দ্বিতীয় দিনের শুনানি আজ
আদালত অবমাননার মামলা: শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড