কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় একাধিক প্রাণহানির ঘটনায় শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকিস্তানের বিজয় এবং তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ আরও কয়েক সপ্তাহ গড়ালে ভারতের জন্য ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা হতো ভয়াবহ এবং কাশ্মীরের রাজনৈতিক মানচিত্রেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যেত।
ভারতীয় সেনা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এ যুদ্ধে তাদের প্রধান দুর্বলতা ছিল পাকিস্তান-সমর্থিত তুর্কি ড্রোন প্রযুক্তির আক্রমণ। যদিও পাকিস্তান বা তুরস্ক কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এই সহযোগিতা স্বীকার করেনি, তবে যুদ্ধের ফলাফল এবং ড্রোন ব্যবহারের ধরণ দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তুর্কি প্রযুক্তির একটি বড়সড় পরীক্ষা ও প্রমাণ হয়ে উঠেছে এই যুদ্ধ।
তুরস্কের ইস্তানবুলসহ বিভিন্ন শহরে পাকিস্তানের বিজয়ে সাধারণ নাগরিকদের উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। স্থানীয় নিরাপত্তাকর্মী কামেল ইয়ালচেন বলেন, "পাকিস্তানিরা আমাদের ভাই। তাদের বিজয়ে আমি গর্বিত। তুর্কিদের সম্মান এখন বিশ্বজুড়ে। আমরা আর অবহেলিত নই।"
ইয়িলদিজ টেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেহমেত বলেন, “বিশ্বকে বুঝতে হবে, প্রযুক্তির নেতৃত্ব এখন শুধু পশ্চিমাদের হাতে নেই। আগামী দিনের যুদ্ধ নেতৃত্বে থাকবে মুসলিম বিশ্বের, বিশেষ করে তুরস্কের হাতে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রোন গবেষক ড. এএফএম শাহেন শাহ বলেন, “এবারকার যুদ্ধে ভারতের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফ্রান্সের তৈরি স্নেকমা এম৮৮-৪ই টার্বোফ্যান ইঞ্জিনচালিত যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিপরীতে পাকিস্তান স্বল্প ব্যয়ের তুর্কি ড্রোন ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছে। এ যুদ্ধজয় মানেই ড্রোন প্রযুক্তির বিজয়।”
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান যুদ্ধের সময় প্রায় ৩০০-৪০০টি তুর্কি আসিসগার্ড সংগার ড্রোন ব্যবহার করে। কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে এসব ড্রোন দিয়ে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ব্যবহারকৃত ড্রোনগুলো ছিল তুরস্কের তৈরি।
২০১৯ সালে আসিসগার্ড সংগার ড্রোন তৈরি হয় এবং ২০২০ সাল থেকে এটি তুর্কি সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি একটি অস্ত্র-সংযুক্ত ড্রোন, যা নজরদারি, টার্গেট শনাক্তকরণ এবং আক্রমণের জন্য কার্যকর। এতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল সংযুক্ত থাকে, যা একাধিক ম্যাগাজিন বহনে সক্ষম এবং দিনরাত উভয় সময়েই ছোট লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।
তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তির উত্থান শুরু হয় ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে। বায়কার টেকনোলজি এবং আসিসগার্ডের মতো কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবনী ড্রোন বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়। আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধ, লিবিয়া, সিরিয়া এবং আফ্রিকার একাধিক দেশে তুর্কি ড্রোন ব্যবহৃত হয়ে সাফল্য আনে।
ড্রোন প্রযুক্তিতে পিএইচডি গবেষক আনিস আহমেদ জানান, “কম খরচে উন্নত প্রযুক্তি, সরাসরি ভিডিও সম্প্রচার ও টার্গেট নির্ধারণের সক্ষমতা, সহজ প্রশিক্ষণ এবং দ্রুত মোতায়েনযোগ্যতা—এসব কারণে তুর্কি ড্রোন আজকের দিনে সবচেয়ে কার্যকর। পাকিস্তানের বিজয়ে এর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বর্তমানে তুরস্ক অন্তত ২০টি দেশে ড্রোন রপ্তানি করছে। পাকিস্তান, আজারবাইজান, কাতার, ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, নাইজারসহ একাধিক দেশে ড্রোন প্রযুক্তি পৌঁছে দিয়ে তুরস্ক শুধু প্রতিরক্ষা নয়, কূটনৈতিক শক্তিতেও পরিণত হচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ফলাফল সেই বাস্তবতারই নতুন উদাহরণ হয়ে উঠেছে
সূত্র: আমার দেশ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই