সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্যিক আমদানির ওপর অগ্রিম কর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে। এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলমান ভ্যাট ফাঁকি ও অনিয়ম প্রতিরোধ করা।
আজ সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় বাজেট উপস্থাপনার সময় এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, নতুন কর বৃদ্ধি কার্যকর হলে আগামী অর্থবছরে ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিশু খাদ্য, মশলা, ফলমূল, পোশাক, যানবাহন, খেলনা, সিরামিক পণ্য, বাথরুম ও বৈদ্যুতিক ফিটিংস, সুইচ ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বেশ কিছু আমদানিকৃত পণ্যে অগ্রিম করের হার বর্তমান ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, আমদানির সময় অগ্রিম কর আদায় করাই সবচেয়ে কার্যকর ও ফাঁকি প্রতিরোধের পথ। কারণ স্থানীয় বিক্রয় থেকে আদায় করা ভ্যাটের তুলনায় আমদানির ওপর অগ্রিম কর আদায় সহজ এবং নিশ্চিত।
তবে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যে এর তীব্র সমালোচনা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সরকারের এই পদক্ষেপকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর মনে করছেন।
এনবিআরের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের পরিমাণ মোট জিডিপির প্রায় ১৭ শতাংশ। এর পুরো ভ্যাট আদায় সম্ভব হলে রাজস্ব আয় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা হতে পারত, কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৪ হাজার কোটি টাকা আদায় হচ্ছে।
কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশিস বড়ুয়া মন্তব্য করেন,
“সরকার স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় আমদানির ওপর কর বাড়াচ্ছে। তবে এই অতিরিক্ত করের বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের পকেটে পড়বে।”
সরকারের কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের উপর মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।