ইসরায়েলের তেল আবিবে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন হামাসের জিম্মি হয়ে গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ২২ বছর বয়সী ইসরায়েলি তরুণী মিয়া শেম। ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ-এর বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে দেশটির কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার দিন মিয়া ছিলেন দক্ষিণ ইসরায়েলের নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে। হামলায় আহত হওয়ার পর তাঁকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি হামাসের হাতে ৫৫ দিন বন্দী ছিলেন। ওই সময়ে তিনি শারীরিক নির্যাতনের আতঙ্কে দিন কাটিয়েছেন। তবে তাঁর ভাষায়, মুক্তি পাওয়ার পর নিজের ঘরে, সবচেয়ে নিরাপদ স্থানটিতেই ধর্ষণের মতো ভয়াবহ ঘটনার শিকার হতে হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মিয়া জানান, বন্দিদশা থেকে ফিরে আসার পর এক সুপরিচিত ফিটনেস প্রশিক্ষকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। প্রশিক্ষক তাঁকে হলিউডের একজন প্রযোজকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন এবং এক পর্যায়ে মিয়াকে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে সেই প্রযোজকের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রলোভন দেখান।
মিয়ার অভিযোগ অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের অনেক পর প্রশিক্ষক অ্যাপার্টমেন্টে এসে মিয়ার বন্ধুকে চলে যেতে বলেন। এর পরের সময়ের স্মৃতি মিয়ার আবছা। তাঁর ভাষায়, শরীর বুঝতে পারলেও চেতনার সঙ্গে তার সংযোগ ঘটাতে কয়েক দিন সময় লাগে। সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁকে মাদক খাইয়ে অচেতন করা হয়েছিল।
পরে পরিবার ও বন্ধুদের উদ্বেগে মিয়া পুলিশের শরণাপন্ন হন। তাঁকে পাঠানো হয় যৌন সহিংসতা শিকারদের জন্য নির্ধারিত সেন্টারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মিয়ার শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। পুলিশ অভিযুক্ত প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তার করলেও পরে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষায় অসংগতিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর উত্তর পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির পাঠানো ‘কী দারুণ রাত, ওয়াও’ শিরোনামের বার্তাও তদন্তাধীন।
এ ঘটনায় আরও এক নারী ওই প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁকে অশ্লীল বার্তা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশিক্ষকের আইনজীবী দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল সহযোগিতা করছেন এবং ঘটনার প্রমাণ হিসেবে মিয়া ও প্রশিক্ষকের একসঙ্গে শরীরচর্চার ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করেছেন। ভিডিওটি মিয়ার অভিযোগের দুই দিন পরের।
মিয়া এ নিয়ে বলেন, ‘আমি শুরুতে বুঝতেই পারিনি আমার সঙ্গে কী ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ভয় ও লজ্জা কাটিয়ে সত্য বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘আমি লুকিয়ে থাকাদের দলে নই।’
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কেউ কেউ মিয়ার পাশে দাঁড়ালেও অনেকেই তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে হিব্রু দৈনিক মারিভ–এর বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, মিয়া শেম স্বীকার করেছেন, বন্দিদশায় থাকাকালীন গাজায় তিনি ইসরায়েলের তুলনায় অধিক নিরাপদ বোধ করতেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই