ভারতে মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদ ও সম্প্রতি সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫ বাতিলের দাবিতে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে শুরু হয় এ মিছিল।
গণমিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির আমির মাওলানা মামুনুল হক। অংশ নেন হাজারো মুসল্লি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, নায়েবে আমির, মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা।
গণমিছিল থেকে দেওয়া এক লিফলেটে খেলাফত মজলিস দাবি করে, ভারতের প্রায় ২৫ কোটি মুসলমান বর্তমানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। দেশভাগের পর থেকে ভারতীয় মুসলমানরা রাষ্ট্রীয় বৈষম্য, সহিংসতা ও অধিকারহীনতার মুখে পড়েছেন। বিজেপি সরকারের অধীনে এই নিপীড়ন বহুগুণ বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫ পাস করা হয়েছে, যা মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পত্তির উপর সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করেছে।
লিফলেটে আরও বলা হয়, নতুন আইন অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা, ওয়াকফ সম্পত্তির সিদ্ধান্ত সরকারকে দেওয়াসহ একাধিক বিধান মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করে। বর্তমানে ভারতে প্রায় ৯ লাখ ওয়াকফ স্থাপনা ও ১০ লাখ একরের মতো জমি রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১,৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ সম্পদ মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও সরকারের হস্তক্ষেপ তা বিপন্ন করছে।
গণমিছিলে বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভারতীয় সরকার ও মিডিয়া প্রচারণা চালালেও ভারতের মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটি দুঃখজনক।”
তারা আরও বলেন, “মসজিদ ভাঙা, নামাজে বাধা, দাঙ্গা, গণপিটুনি, হিজাব নিষিদ্ধকরণ ও মুসলিমদের শিক্ষা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান টার্গেট করা—সবই ভারত সরকারের এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এ অবস্থায় বাংলাদেশের মুসলমানদের পক্ষে নীরব থাকা সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, গণমিছিলটি দুপুরে শুরু হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।