পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বুধবার মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে মুসল্লিরা হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে প্রবেশ করেছেন। মুসল্লিরা মঙ্গলবার রাত থেকেই এহরাম পরে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। আজ জোহরের আগেই তারা নির্ধারিত তাঁবুতে অবস্থান নিয়েছেন। মিনার এই তাঁবু নগরীতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ১৫ লাখের বেশি মুসল্লি সমবেত হয়েছেন।
৯ জিলহজ বৃহস্পতিবার মুসল্লিরা মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফাতের উদ্দেশে রওনা দেবেন। ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়ে তাঁরা হজের মূল রুকন—‘ওকুফে আরাফাত’ পালন করবেন। এ সময় মসজিদে নামিরা থেকে প্রচারিত হবে হজের খুতবা, যা বাংলাসহ ২০টি ভাষায় অনুবাদ হবে। এবার খুতবা দেবেন মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।
সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, মিনার তাঁবু শহর ঝলমল করছে। হজযাত্রীদের জন্য নিরাপদ, আগুন প্রতিরোধী এবং সুসজ্জিত তাঁবু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বাস ও অন্যান্য পরিবহন যানবাহন মজুদ রয়েছে হজযাত্রীদের আরাফাত, মুজদালিফা ও জামারাতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করতে। পাশাপাশি পাথর নিক্ষেপের (রমি জামারাত) জন্য জামারাত কমপ্লেক্স পরিদর্শনে রয়েছে সরকারি বাহিনী ও পদাতিক দল।
মিনার অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে আধুনিক প্রকৌশল দক্ষতায়। ২৬ লাখের বেশি হজযাত্রীর থাকার উপযোগী তাঁবু এলাকায় রয়েছে উন্নত সড়ক, সেতু ও টানেলের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, যা মিনাকে হজের একটি অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
বাংলাদেশ হজ অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে এ বছর ২২৪টি ফ্লাইটে মোট ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে এক নারীসহ ১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে, সোমবার রাতে মক্কায় হজ অফিসের কনফারেন্স কক্ষে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে হজ প্রতিনিধি দলের একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশি হজযাত্রীদের মিনায় যাতায়াত, খাবার, আবাসন ও চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, হজ প্রশাসনিক দলের নেতৃবৃন্দ, হাবের সভাপতি ও মহাসচিব, চিকিৎসক দল ও আইটি দলের প্রতিনিধিরা।
হজের এই পবিত্র যাত্রা আগামী ১২ জিলহজ পর্যন্ত চলবে। ধাপে ধাপে হজের নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে মুসল্লিরা সম্পন্ন করবেন মহান আল্লাহর প্রতি তাদের আত্মনিবেদনের এই রীতি।