ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এর উদ্যোগে 'জুলাই ঘোষণাপত্রঃ শহীদ পরিবার ও আহতদের ভাবনা' শীর্ষক আলোচনা সভা আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জুলাই ঐক্যের অন্যতম নেতা আব্দুল্লাহ আল মিনহাজের সঞ্চালনায় জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা করেন আপ বাংলাদেশ এর আহবায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা ইরা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহতগণ। আলোচনা সভায় সূদুর কক্সবাজারের উখিয়া থেকে উপস্থিত ছিলেন একমাত্র বিদেশী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী থেকে শহীদ হওয়া নূর মোস্তফার পিতা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আপ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও জুলাই স্মৃতি বিষয়ক কমিটির প্রধান আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া।
সভায় আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ❝আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার ডাকে জুলাইয়ে নামি নি। যে অস্ত্র-গুলি জনগণের টাকায় কেনা, তা জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হওয়ার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছি। আজ রক্তের উপর দাঁড়িয়ে সরকার শহীদ ও আহতদের তালিকা করতে না পেরে ও শহীদ পরিবার এবং আহতদের ডেকে তাদের কথা না শুনে নৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া এ রাষ্ট্রে জনগণের অধিকার আদায় সম্ভব না। শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি এই সরকারকে দিতে হবে। বিচার নিয়ে ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রশ্নে কোনো তালবাহানা মেনে নেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ স্পষ্ট বাংলাদেশে একটি সন্ত্রাসী দল।
তিনি আরো বলেন, ১০ মাস পার হলেও শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন করা হয় নি। যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন করা না হয় তবে আমরা সবাইকে নিয়ে আবারো রাজপথে নেমে আসবো। শহীদ পরিবারের জন্য পাশ হওয়া সঞ্চয়পত্র যখন হাতে পাবে তখন থেকে লভ্যাংশ নয় বরং লভ্যাংশ ২০২৪ এর আগষ্টের ৫ তারিখ থেকে দিতে হবে। অতিসত্বর ডিএনএ প্রোফাইল করে গণকবর দেয়া ও অজ্ঞাত শহীদদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।❞
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কথা বলতে যেয়ে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এর সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ বলেন, ❝এই সরকারের প্রথম কাজ ছিলো শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম যেখানে ১৪০০ এর বেশী শহীদের কথা বলেছে, সেখানে সরকার এখনো ৮৩৪ সংখ্যা পার হতে পারে নাই। দুটো ঈদ গেলো এই সরকারের আমলে, সেখানে সরকার প্রধান বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গ ও রাজনৈতিক দলের সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করলেও শহীদ পরিবারের সাথে ঈদ পালন করতে তারা আজ ব্যর্থ।
আলোচনায় রোহিঙ্গা শহীদ নূর মোস্তফার পিতা বলেন, শরণার্থী হলেও ভালোবাসা থেকে বাংলাদেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার জন্য পরিবারের বাঁধা উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে এসেছিলো। কিন্তু রোহিঙ্গা শরনার্থী হওয়ায় তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হয় নি। প্রতিটি সরকারি দপ্তরে গেলে বাংলাদেশের নাগরিক নয় বলে তাদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, অথচ এই গণ আন্দোলন কোনো নাগরিকত্ব দেখে হয় নি, কোনো কাগজপত্র দেখে হয় নি।
সভায় শতাধিক শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বক্তারা বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি কিন্তু বৈষম্য আজও দূর হয় নি। একটা ইলেকশনের জন্য আমাদের সন্তানরা জীবন দেয়নি। সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বুক ফুলিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। আমরা চাই বিচার, আমরা চাই জুলাই ঘোষণাপত্র, আমরা চাই ইনসাফ, আমরা চাই মানুষের জন্য বাংলাদেশ। দৃশ্যমান বিচার ও সকলের প্রত্যাশার ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া আমরা অন্য কিছু আগে হতে দিবো না। গণকবরে যারা শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয়টা পর্যন্ত ১১ মাসে আপনারা বের করতে পারলেন না।
প্রয়োজনে আমরা শহীদ পরিবার ও আহতরা কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামবো। জামায়াতের মতো একটা দল প্রায় হাজার খানেক শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে অথচ রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত পারলো না। কথাগুলো খুব কঠিন কিন্তু এগুলো আমাদের উচ্চারণ করতে বাধ্য করতেছেন আপনারা।
আলোচনায় শহীদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার পিতা প্রশ্ন রাখেন, আমাদের কেন সরকারের কাছে জুলাই সনদ চাইতে হবে? কেন এই হত্যাকান্ডের বিচার চাইতে হবে? এই সরকার তো ক্ষমতায় বসে আছে শহীদদের রক্তের উপর। সরকারের উচিত ছিলো নিজ দায়িত্বে জুলাই সনদ ও বিচারের ব্যবস্থা করা। তিনি দাবি করেন অতিসত্বর খুনীদের বিচার কাজ ত্বরান্বিত করতে হবে ও জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে।
শহীদ শাহাদাত হোসেন শাওনের বাবা বলেন, আমাদের সরকার কি ডা. শফিকুর রহমান? সরকারের যা করার কথা, তা সবই উনি করছেন। তাহলে সরকার করছেটা কি?
যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘাটতি খুবই ছোট- বাণিজ্য উপদেষ্টা
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিতে চায় তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়: হাসনাত
সানেম'র জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিএনপি ৩৯, জামায়াত ২২, এনসিপি ১৬ ভাগ ভোট পাবে
কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬ আসনে খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ