পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বীকৃত সন্ত্রাসী’ বলে মন্তব্য করেছেন। ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগও আনেন তিনি। পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এবং জিও নিউজ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আসিফ।
তিনি বলেন, “ভারত শুধু নিজ দেশে নয়, বিদেশেও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়েছে। কানাডায় গিয়ে শিখ নেতাদের টার্গেট করেছে।” ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক কার্যক্রমকে ‘সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি দাবি করেন, ভারত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে মদত দিয়ে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তকে দীর্ঘদিন ধরে অস্থির করে রেখেছে।
গত ১০ মে পাকিস্তান যে পাল্টা সামরিক অভিযান চালায়, তা ছিল ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার সর্বশেষ অধ্যায়। খাজা আসিফের ভাষ্যমতে, “আমাদের আক্রমণে ভারত দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় টার্গেট করে পাল্টা হামলা চালানো হয়। এর পর ভারত যুদ্ধবিরতির জন্য পাঁচটি দেশের সহায়তা চায়।”
তিনি আরও দাবি করেন, “পাকিস্তান এবার কূটনৈতিক, সামরিক ও মনস্তাত্ত্বিক—তিন ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে।” মোদির সাম্প্রতিক টেলিভিশন ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে আসিফ বলেন, “তাঁর কথাবার্তায় পরাজয়ের ছাপ স্পষ্ট।” তিনি কাশ্মির ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনার দরজা খোলা রেখেছেন বলেও উল্লেখ করেন আসিফ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারত ও পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মির ইস্যু ও সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কানাডার ভেতরে শিখ নেতা হত্যা এবং তা নিয়ে কানাডা-ভারত কূটনৈতিক টানাপোড়েনও আলোচনায় এসেছে। সেই প্রেক্ষাপট টেনে আসিফ বলেন, “ভারতের সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুধু পাকিস্তানে নয়, কানাডাতেও দেখা গেছে।”
তবে ভারত এখনো খাজা আসিফের এই অভিযোগের আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি। তবে অতীতের অনুরূপ অভিযোগগুলো ভারত বরাবরই ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য আসন্ন ভারতীয় নির্বাচন ও আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এক ধরনের কৌশলগত বার্তা। একদিকে পাকিস্তান অভ্যন্তরীণভাবে নিজেদের জনমতকে সংহত করতে চাইছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে ভারতের আগ্রাসী ভাবমূর্তিকে চ্যালেঞ্জ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কাশ্মির নিয়ে আলোচনার দরজা খোলা রাখার ইঙ্গিত আসিফের কূটনৈতিক বার্তার একটি ইতিবাচক দিক, যদিও এর বাস্তবায়ন নির্ভর করবে উভয় দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপের ওপর।
সূত্র:আমার দেশ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই