যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক খসড়া শান্তি চুক্তির বিষয়ে বুধবার প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে ইউক্রেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, মার্কিন এই প্রস্তাবে রাশিয়ার জন্য রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা, যার মধ্যে রয়েছে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি এবং ২০২২ সালের পর দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে মস্কোর নিয়ন্ত্রণকে কার্যত মেনে নেওয়া।
খসড়াটি গত সপ্তাহে প্যারিসে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। এক পাতার এই প্রস্তাবকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউজ। তারা জানায়, দুই পক্ষ যদি শিগগিরই কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার টেবিল থেকে সরে আসতে প্রস্তুত।
প্রস্তাব অনুযায়ী, রাশিয়াকে দেওয়া হবে ক্রিমিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের রুশ নিয়ন্ত্রণকে কার্যত স্বীকৃতি এবং ২০১৪ সাল থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি, রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনকে দেওয়া হবে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’—যা কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের নিয়ে গঠিত একটি সাময়িক জোটের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। তবে এতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকবে না। এছাড়া খারকিভের একটি ছোট অংশ ফেরত দেওয়া, দিনিপ্র নদীপথে বাধাহীন যাতায়াত এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এই কেন্দ্র পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবে উভয় দেশ।
প্রস্তাবে ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও অর্থায়নের উৎস অনির্দিষ্ট। একই সঙ্গে একটি খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষরেরও ঘোষণা রয়েছে, যা ট্রাম্প বৃহস্পতিবার সই করবেন বলে জানা গেছে।
তবে কিয়েভ এ প্রস্তাবকে রাশিয়ার প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে দেখছে। এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেন, “এই প্রস্তাবে রাশিয়ার লাভ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু ইউক্রেন কী পাবে তা পরিষ্কার নয়।”
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধরেখা অপরিবর্তিত রেখে শান্তিচুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব তিনি আগেই প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ইতোমধ্যে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে চতুর্থ বৈঠকের জন্য মস্কো যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না। তার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেবেন ইউক্রেনের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা কিথ কেলোগ।
এদিকে, লন্ডনে অনুষ্ঠেয় আলোচনায় ইউক্রেন শান্তি প্রস্তাবের বদলে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা যুদ্ধের অবসানের একটি কাঠামো গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছি।”
হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, “আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে এবং আমরা আশাবাদী যে এটি সঠিক পথে এগোচ্ছে।”
সূত্র:রয়টার্স
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই