অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে চলমান গুঞ্জনের মধ্যে নিজের দেওয়া স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যা ও সংশোধন করলেন তার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফাইজ তাইয়েব আহমেদ।
শুক্রবার বিকেলে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক নতুন পোস্টে জানান, প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে তার আগের মন্তব্যটি ছিল “ব্যক্তিগত মতামত” এবং সেটিকে সংবাদ হিসেবে পরিবেশন না করার অনুরোধও জানান।
নতুন স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন:
“ডিসক্লেইমার — মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। ধন্যবাদসহ।”
এই বক্তব্যের পাশাপাশি তিনি তার আগের পোস্টটিও সরিয়ে ফেলেন, যা নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
মুছে ফেলা পোস্টে ফাইজ আহমেদ লিখেছিলেন,
“প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ড. ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য তার প্রয়োজন আছে।”
তিনি আরও লেখেন,
“সরকারকে আরও কার্যকর হতে হবে, উপদেষ্টাদের কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত আলোচনা করতে হবে। বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।”
এছাড়া সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন,
“সেনাবাহিনী রাজনীতি করবে না। নির্বাচনের বিষয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস বজায় রাখেনি। তবে সেনাবাহিনীকে সম্মান দেখাতে হবে এবং আস্থায় রাখতে হবে।”
ফাইজ তাইয়েব আহমেদ তার স্ট্যাটাসে ইঙ্গিত দেন,
“নির্বাচন এপ্রিল-মে ২০২৬ এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। তার আগেই সমস্ত যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে এবং 'জুলাই সনদ' বাস্তবায়ন করতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, আগামী জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে এবং এই সময়ের মধ্যেই তিনি স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায় দেখতে চান বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ মে), একাধিক অনানুষ্ঠানিক সূত্রে দাবি করা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এই মুহূর্তে ‘চরম দুশ্চিন্তায়’ রয়েছেন এবং রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হলে পদত্যাগ বিবেচনায় আনতে পারেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ফাইজ আহমেদের স্ট্যাটাস সরিয়ে নেওয়া এবং সেটিকে ব্যক্তিগত মত বলে ব্যাখ্যা দেওয়া—অন্তর্বর্তী সরকারের অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য এবং রাজনৈতিক চাপের সম্ভাব্য ইঙ্গিত বহন করে। একদিকে সরকারব্যবস্থা সুসংহত করার কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে উপদেষ্টামণ্ডলীর ভেতর থেকে স্পষ্ট বার্তা আসছে না, যা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার যে একটি সংকটকাল পার করছে, তা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশেষ সহকারী ফাইজ আহমেদের স্ট্যাটাসের পেছনে ব্যক্তিগত মত থাকলেও, সেটির প্রতিক্রিয়া এবং সংশোধন সরকারের অভ্যন্তরে বিরাজমান চাপ ও বিভাজনের চিত্র উন্মোচন করে। এই মুহূর্তে সিদ্ধান্তহীনতা বা বার্তাগত বিভ্রান্তি দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উত্তরণের পথে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগানের মাধ্যমে শেষ হওয়া একটি সহকারীর বক্তব্য, আদতে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা নাকি বিপ্লবী আবেগ, সেটিই এখন প্রশ্ন।
যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘাটতি খুবই ছোট- বাণিজ্য উপদেষ্টা
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিতে চায় তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়: হাসনাত
সানেম'র জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিএনপি ৩৯, জামায়াত ২২, এনসিপি ১৬ ভাগ ভোট পাবে
কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬ আসনে খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ