বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শনিবার (১০ মে) বিকেলে গুলশানে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদানকালে জনগণকে ভোটাধিকার রক্ষায় সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে বিএনপি এমন একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। ভোট ও রাজনৈতিক অধিকার যাতে কেউ কুক্ষিগত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে বলেও তিনি আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, নিরাপদ ও মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্রই হলো বিশ্বের একমাত্র উত্তম বিকল্প। বাংলাদেশে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে যারা গণতন্ত্রের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তারা দেশের জনগণের চোখে গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭১, ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে জনগণ গণতন্ত্র রক্ষায় রক্ত দিয়েছে, আন্দোলন করেছে। এখন দেশের জনগণ দৃঢ়ভাবে দুটি বিষয়ে একমত—প্রথমত, বাংলাদেশ যেন ভবিষ্যতে আর কোনো তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত না হয়; দ্বিতীয়ত, গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি যেন আর কখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের মতো পতিত, সংবিধান লঙ্ঘনকারী, গুম-খুন-দুর্নীতিতে জড়িত অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না। সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে যারা দায়ী, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বৌদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান তারেক রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপিটক পাঠ করেন কয়েকজন বৌদ্ধ ভিক্ষু। পরে তিনি বলেন, দলমত, ধর্ম নির্বিশেষে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রথম পরিচয়—আমরা বাংলাদেশি। এই পরিচয়ের ভিত্তিতে সকল নাগরিক রাষ্ট্র ও সমাজে সমান এবং ন্যায্য অধিকার ভোগ করবে—এটাই বিএনপির মৌলনীতি।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল দেখতে চায়, তবে এই সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের সামনে স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরার দাবি জানিয়ে আসছে। স্বচ্ছতার অভাবে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
তিনি দেশের গণমাধ্যমকে আহ্বান জানান, ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় যে সব দুঃশাসন ও নির্যাতন সংগঠিত হয়েছে—বিশেষ করে সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের চিত্র ও পটভূমি অনুসন্ধান করে প্রকাশ করুক। তিনি বলেন, রামু, নাসিরনগর, রংপুর, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধাসহ বহু জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও ঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর পেছনের শক্তিকে চিহ্নিত করা জরুরি। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে কেউ যেন এই সম্প্রদায়গুলোকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার সাহস না পায়।
শেষে তিনি বলেন, বিএনপি যদি ভবিষ্যতে জনগণের রায়ের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়, তবে দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসনে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে সর্বদলীয় ও সর্বধর্মীয় নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক দীপেন দেওয়ান এবং সঞ্চালনা করেন সুভাষ চন্দ্র চাকমা। এতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। শেষে অতিথিদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
সূত্র:প্রথম আলো
যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘাটতি খুবই ছোট- বাণিজ্য উপদেষ্টা
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিতে চায় তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়: হাসনাত
সানেম'র জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিএনপি ৩৯, জামায়াত ২২, এনসিপি ১৬ ভাগ ভোট পাবে
কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬ আসনে খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ