আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর দেশে নতুন করে নাশকতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, দলটি ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে পারে এবং নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাতে পারেন। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেখামাত্র গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের প্রতিটি জেলা ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে পৌঁছে গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশত্যাগ করা সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং গ্রেফতার হওয়া নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ছিলেন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ আরও তৎপর হয়েছে।
রাজধানীসহ সারা দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং জেলার এসপিদের সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, নিষিদ্ধ সংগঠন কোনোভাবেই পুলিশের অধীন এলাকায় তৎপরতা চালাতে পারবে না। কেউ চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, কোনো পুলিশ সদস্য যদি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতি শিথিলতা প্রদর্শন করেন, তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এসএন নজরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগসহ দলটির সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো তৎপরতা চালাতে পারবে না। সাইবার জগতেও তাদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সংগঠনের কাউকে দেখামাত্রই গ্রেফতারের নির্দেশ রয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী গোপনে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে—এমন তথ্য তাদের হাতে রয়েছে। সম্ভাব্য নাশকতাকারীদের তালিকা ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং গ্রেফতার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। সাইবার স্পেসে তাদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, কারণ নেতাকর্মীরা এখন অনলাইনে যোগাযোগ বৃদ্ধি করছে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক ঝটিকা মিছিল ও অনলাইন তৎপরতায় জড়িতদের শনাক্ত করে ইতোমধ্যে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম মুরাদ, সাবেক এমপি শামীমা আক্তার খানম (শামীমা শাহরিয়ার), সেলিনা ইসলাম, শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব মো. আশরাফ সিদ্দিকী (বিটু) এবং কুমিল্লার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস ছোবহান ভূঁইয়া হাসান।
নাসিরুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারা ঢাকায় আত্মগোপনে রয়েছেন, তাদের বিষয়ে বিশেষ নজরদারি চলছে এবং বিভিন্ন জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইউনিটগুলো সহযোগিতা করছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিরোধে পুলিশ সচেষ্ট। যেসব ব্যক্তি এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এমন কোনো তৎপরতা বরদাশত করা হবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সাইবার প্যাট্রোলিংয়ের মাধ্যমে এসব অপতৎপরতা রোধ করা হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টার দায়ে প্রতিদিনই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ২৪-এর গণহত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি জানান, রাজধানীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি সর্বদা সজাগ রয়েছে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান দায়িত্ব।
যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘাটতি খুবই ছোট- বাণিজ্য উপদেষ্টা
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিতে চায় তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়: হাসনাত
সানেম'র জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিএনপি ৩৯, জামায়াত ২২, এনসিপি ১৬ ভাগ ভোট পাবে
কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬ আসনে খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ