আজ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ইং শনিবার জুলাই মঞ্চের ৫ম শহীদি মার্চ যাত্রাবাড়ি থানার সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবীতে জুলাই মঞ্চের ৬২ তম দিনে এই মার্চটি অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মার্চটি সম্পন্ন হয়।
জুলাই মঞ্চ প্রতিনিধি সাকিব হোসেন বলেন, বর্তমান প্রশাসনে গণহত্যায় জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের চাকরি এখনো বহাল রয়েছে, অধিকাংশকেই এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। গণহত্যার মামলাগুলোর কার্যক্রম এগোচ্ছেনা। গণহত্যার শিকার শহীদ পরিবাররা বিচার নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছে৷ তারা মনে করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলে গেলে তারা আর বিচার পাবেনা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম এখনো আশাব্যঞ্জক অবস্থায় পৌছায়নি। বাংলাদেশে গণহত্যা হবে আর গণহত্যা কারীরা অর্থ ও বৈদেশিক প্রভাবে পার পেয়ে যাবে এমনটা আমরা মেনে নেবো না। ড.ইউনুসের মাথায় কাঠাল ভেঙে বিচরণ করা কিছু উপদেষ্টা ও প্রশাসনিক ব্যক্তিরা গণহত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত করছে বলে আমরা মনে করছি। তারা তাদের দায়িত্ব পালন না করে ড. ইউনুস সহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর পেছেনে ফ্যাসিবাদের দেশী ও বিদেশী দোসররা ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি। এই উপদেষ্টা পরিষদের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার আগ্রহ দেখতে পাচ্ছিনা। তাই জুলাই মঞ্চ ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তার নেতৃত্বেই জাতীয় সরকারে রুপ দেবার জন্য কাজ করে যাবে। কেননা জাতীয় সরকার ছাড়া বাংলাদেশের সরকারে গণ অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপূর্ণ ভাবে প্রতিফলিত হবেনা। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধের জন্য আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের সকল অংশীদারদের সমন্বিত জাতীয় সরকার চাই।
জুলাই মঞ্চের অন্যতম প্রতনিধি আরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে দুর্বৃত্তায়ন গড়ে উঠেছে ২৪ এর বিপ্লব তারও বিরুদ্ধে বড় একটা বার্তা। অথচ রাষ্ট্রে সেসকল সমস্যা রেখে এখন কেবল অতীতের মতই একটা নির্বাচনের জন্য সকলে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং প্রশাসনের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার পূর্বে কোন নির্বাচন দেয়া হলে তা হবে ২৪ এর শহীদদের প্রতি অবিচার। যদি এই ইনটারিম সরকার নিজেদের উক্ত কাজগুলোর জন্য অযোগ্য মনে করে তাহলে অবিলম্বে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠন করে উক্ত কাজ গুলো করেই তবে নির্বাচন দিতে হবে।
জুলাই মঞ্চ প্রতিনিধি অর্নব হুসাইন বলেন, অনতিবিলম্বে ডিএমপি কমিশনার অফিসের ০৯এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে, অন্যথায় আমরা ডিএমপি কমিশনার অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। আমরা দেখতে পেয়েছি ডিএমপি কমিশনার অফিস থেকে গত ০৯ এপ্রিল একটা প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে সকল থানায়। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যা মামলার আসামিদের ধরার আগে কমিশনার অফিসে অবহিত করতে। আমরা ডিএমপি কমিশনার অফিস থেকে আসা এই ধরনের কাজ কে ভ্যাসিবাদের পাহারাদার হিসেবে দেখছি। এই প্রজ্ঞাপনের পরে ১৭ এপ্রিল আওয়ামিলীগ যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে। এর থেকে প্রমানিত হয় আওয়ামিলীগ এখনো তাদের কিলিং মিশন আবারও বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গণহত্যার বিচার সবার আগে করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের নতুন ৫ টি বেঞ্চ গঠন করে দ্রুত সময়ে বিচার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।
শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম জানতে চান যে, সঠিক বিচার কেন এখনো হচ্ছেনা, আসামী কেন এখনো গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। পুলিশ এর উদ্দেশ্যে বলেন, পুলিশলীগ, আওয়ামীলীগসহ যারাই এই গনহত্যার সাথে জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে বিচার করুণ। সুষ্ঠু বিচার আর দেশ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন ঘোষণা না করার আহবান জানান তিনি।
যাত্রাবাড়িতে নিহত শহীদ শাকিলের মা হেলেনা বেগম বলেন ড. ইউনুস সরকার চলে গেলে আমরা আর বিচার পাবো না। এই সরকার থাকতে থাকতেই আমরা আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।
জুলাই মঞ্চের ৫ম ও সর্বশেষ শহীদি মার্চ শেষে উপস্থিত জনতা ও মঞ্চের প্রতিনিধি বৃন্দ যাত্রাবাড়ি থানায় দায়িত্বরতদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং যাত্রাবাড়ি থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আইজিপির কাছে একটি বার্তা প্রেরণ করেন। তা হলো, বাংলাদেশে গণহত্যার শিকার প্রত্যেকটি পরিবার কাছে পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল স্বশরীরে গিয়ে সেই পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইবে এবং শহীদের কবর জিয়ারত করবে।
মঞ্চ প্রতিনিধি তাসমিয়া রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন শহীদ মেহেদী হাসানের মা পারভীন বেগম, কয়েকজন আহতের পরিবারের সদস্য, হাসিব বিল্লাহ, মো: ইমরান, খোকন মিয়া, মো: আনিসুল ইসলাম,
অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে নীলফামারীর জনসভায় ডা. শফিকুর রহমান
আ. লীগের মিছিল ঠেকাতে না পারলে পুলিশকে জবাবদিহি করতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভরা মৌসুমেও দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ, পুরোনো সিন্ডিকেটই কি ফের সক্রিয়?
বৈদেশিক দেনা পরিশোধে ডিসেম্বরকে লক্ষ্য করে কর্মপরিকল্পনা
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না