গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২,৩১৪ জনে। সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, একই সময়ে আহত হয়েছেন ১৫৩ জন। ফলে মোট আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৭,৭৯২ জনে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনও বহু হতাহত ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকায় প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকর্মীরা নিরাপত্তাজনিত কারণে অনেক স্থানে পৌঁছাতে পারছেন না।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজায় টানা ১৫ মাস আগ্রাসন চালানোর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিতে পৌঁছেছিল। তবে ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইল আবারও চুক্তি লঙ্ঘন করে ধ্বংসাত্মক অভিযান শুরু করে। এ সময়ের মধ্যে আরও ২,২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫,৭০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
পাশাপাশি গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। সোমবার থেকে জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আইসিজেতে এক সপ্তাহব্যাপী শুনানি শুরু হয়েছে।
শুনানিতে ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তা আম্মার হিজাজি অভিযোগ করেন, ইসরাইল গাজায় মানবিক সহায়তা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং সাহায্য আটকে দিয়ে মানবিক বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। তিনি বিচারকদের বলেন, ‘ক্ষুধা এখন অস্ত্রের পর্যায়ে চলে গেছে।’
যদিও এই শুনানিতে ইসরাইল অংশ নিচ্ছে না, তবে যুক্তরাষ্ট্র বুধবার শুনানিতে অংশগ্রহণ করবে। জাতিসংঘ আইসিজেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও সতর্কতার সঙ্গে দ্রুত রায় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে চূড়ান্ত রায় পেতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।
শুনানিতে বিচারকরা জাতিসংঘ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও তৃতীয় পক্ষীয় রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ইসরাইলের আইনি বাধ্যবাধকতা মূল্যায়ন করবেন, যাতে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য জরুরি সহায়তার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।