৩ জুন — শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন (বিআরজেএ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাতীয় ঐক্য ও গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতার ওপর জোর দেওয়া হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আধিপত্যবাদ বিরোধী শক্তির ঐক্যই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গঠনের পথ, আর সেই পথেই শহীদ জিয়ার আদর্শ ও দর্শন আজও প্রাসঙ্গিক।
আলোচনা সভার সূচনায় শহীদ জিয়াউর রহমানসহ স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিআরজেএ মহাসচিব এস. এম. বদরুল ইসলাম এবং দোয়া পরিচালনা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের পেশ ইমাম মাওলানা মনিরুজ্জামান।
গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং জাতীয় ঐক্য রক্ষার ওপর জোর
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, “আধিপত্যবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরাতে ফ্যাসিস্টরা নানা কৌশল নিয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত এই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। শহীদ জিয়ার গণতান্ত্রিক দর্শনই ছিল—সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল ও মুক্ত গণমাধ্যম।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় ঐক্যে যাতে বিভাজন না আসে, সে বিষয়ে তারেক রহমান সতর্ক। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি ও মজলুম রাজনৈতিক দলগুলো যে দমন-পীড়নের মধ্যেও ঐক্য ধরে রেখেছে, তা ভবিষ্যতের আন্দোলনের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। জনগণই হচ্ছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী—তাদের সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।”
তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যের ডাক
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম চৌধুরী। তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী, যাদু মিয়া এবং শহীদ জিয়ার আধিপত্যবাদ বিরোধী ঐতিহ্য আমাদের প্রেরণা। জাতীয় ছাত্রদল থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে আমার যোগদানের পেছনে এই দর্শনের ভূমিকা ছিল। আজ আমরা একত্রিত হয়েছি তারেক রহমানের নেতৃত্বে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি নতুন ঐক্যের শক্তি গড়ে তুলতে।”
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এ কে এম আমিনুল হক বলেন, “আধিপত্য রুখে দিতে হলে শুধু রাজনৈতিক ঐক্য নয়, অর্থনৈতিক সচেতনতাও প্রয়োজন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই আন্দোলনে আমাদের সক্রিয় থাকতে হবে।”
গণমাধ্যমকে সতর্ক থাকার আহ্বান
ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার আহ্বান ছিল—গণমাধ্যমকে সবসময় সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এই সময়ে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারে একটি সাহসী ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম।”
ড্যাব নেতা অধ্যাপক ডা. খন্দকার জিয়া উল ইসলাম জিয়া বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমার ছোট ভাইকে হারিয়েছি। তবুও পিছু হটিনি। শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে আজো তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। জাতিকে আধিপত্যমুক্ত করতে হলে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে।”
সাংবাদিক সমাজের অংশগ্রহণ
আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান, বর্তমান সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. খুরশীদ আলম। বক্তারা বলেন, “গণমাধ্যম এখন সংকটে। মালিকপক্ষ, রাষ্ট্র এবং বিদেশি চাপের মধ্যে পড়ে অনেক সময় সত্য প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব শহীদ জিয়ার দেখানো পথে সাহসিকতার সঙ্গে সত্য প্রকাশ করা।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন আহমেদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি এম. রাজীবুল ইসলাম তালুকদার (বিন্দু), বিআরজেএ’র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার শিশিরসহ অন্যরা।
আলোচনার সারকথা: ঐক্যই শক্তি
সভাপতির বক্তব্যে বিআরজেএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী বলেন, “আমরা যারা মফস্বলে কাজ করি, তাদের কাছে শহীদ জিয়া ছিলেন দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার প্রতীক। আধিপত্যবাদ রুখতে হলে গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যই আমাদের একমাত্র পথ।”
এই আলোচনা সভা কেবল শহীদ জিয়াকে স্মরণ নয়, বরং আধিপত্যবাদ বিরোধী জাতীয় রাজনৈতিক ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। বক্তারা মনে করেন, একটি স্বাধীন, দায়িত্বশীল এবং সচেতন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া বাংলাদেশকে আধিপত্যমুক্ত করা সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘাটতি খুবই ছোট- বাণিজ্য উপদেষ্টা
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিতে চায় তারাই নির্বাচন পেছাতে চায়: হাসনাত
সানেম'র জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী বিএনপি ৩৯, জামায়াত ২২, এনসিপি ১৬ ভাগ ভোট পাবে
কুমিল্লা অঞ্চলের ১৬ আসনে খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ