চব্বিশের জুলাইয়ে সংঘটিত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি এবং ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সব রাজনৈতিক মামলার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
আজ (২৩ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে দেশে ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করে। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিরস্ত্র মানুষের ওপর চালানো হয় ভয়াবহ গণহত্যা, যার মাধ্যমে তারা তাদের শাসন টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়।
বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, সেই সময়ের আন্দোলনে প্রায় দুই হাজারের অধিক ছাত্রজনতা শহীদ হন, আর অগণিত মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেন। এসব রক্তের বিনিময়ে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, কিন্তু সেই গণহত্যার বিচার এখনো সম্পন্ন হয়নি। উল্টো, বিচারের নামে প্রহসন চলছে এবং অপরাধীদের অর্থের বিনিময়ে মুক্তি ও পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ছাত্রশিবিরের নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে দেশপ্রেমিক আলেম ও রাজনীতিবিদদের হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। তারই অংশ হিসেবে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামকে ২০১২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরবর্তীতে ভিত্তিহীন ও সন্দেহজনক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
তারা বলেন, মামলার সাক্ষীরা যেমন একজন ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনাদর্শী হওয়ার দাবি করেন, অন্য একজন নিজেকে আজহারের ক্লাসমেট বললেও, ডকুমেন্ট অনুযায়ী তিনি ভিকটিম কলেজ ছাড়ার দুই বছর পর ভর্তি হন—এসব থেকেই মামলার অসারতা স্পষ্ট হয়। আপিলে আজহার ন্যায়বিচার পাননি এবং অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়েও বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতার শিকার হচ্ছে, যা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।
নেতারা আরও বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে ছাত্রশিবির ছিল আওয়ামী সরকারের দমন-পীড়নের প্রধান লক্ষ্য। তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এক অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা, দাখিল করা হয়েছে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা। মসজিদ, ঘরোয়া প্রোগ্রাম এমনকি নামাজরত অবস্থায়ও নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে গুম বা হত্যা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০১ জন শহীদ হয়েছেন, সহস্রাধিক পঙ্গু এবং অসংখ্য নেতাকর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। বর্তমানে ৭ জন নেতাকর্মী গুম অবস্থায় আছেন, এবং প্রায় ১১ হাজারের বেশি মিথ্যা মামলা এখনো চলমান রয়েছে।
বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বহু নেতাকর্মীর মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি, যা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার। তারা অবিলম্বে পল্টন, পিলখানা ও শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান।
তারা স্পষ্ট করে বলেন, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে যদি চব্বিশের জুলাই গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি, এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নেমে দাবি আদায়ের আন্দোলনে যেতে তারা বাধ্য হবেন।
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার দাবি
শেখ তন্ময়-সালাহউদ্দিনসহ চারজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি
আদালতে শুনানিতে পলক বলেন, ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে পালিয়ে ছিলেন শিরীন শারমিনসহ ১২ জন
দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তে এগোচ্ছে সরকার
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না