সম্প্রতি ইউক্রেনে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ মন্তব্যটি তিনি করেছেন এমন এক সময়ে, যখন যুদ্ধবিরতির আলোচনা ও বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়া চলছিল। অথচ ঠিক তখনই ইউক্রেনজুড়ে চালানো হয় রাশিয়ার সর্ববৃহৎ বিমান হামলা—যা যুদ্ধের তিন বছরে নজিরবিহীন।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার, সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন:
“রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে কিছু একটা ঘটেছে। তিনি একেবারে পাগল হয়ে গেছেন! তিনি অকারণে অনেক মানুষকে হত্যা করছেন, এবং আমি কেবল সৈন্যদের কথা বলছি না। কোনো কারণ ছাড়াই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ছোড়া হচ্ছে।”
এই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পর, নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ আরও একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন:
“পুতিন যা করছেন তাতে আমি খুশি নই। তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন, এবং আমি জানি না তার কী হয়েছে।”
রবিবার চালানো এই হামলা ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মতে, রাশিয়া দেশটির অন্তত ৩০টি শহরে একযোগে ৩৬৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এর মধ্যে কিয়েভ, ঝাইটোমির, খারকিভ, খমেলনিস্কি, ওডেসা, মাইকোলাইভসহ একাধিক শহর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে ২৬৬টি ড্রোন এবং ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। তবে বাকিগুলো আঘাত হানায় এবং এতে বহু সাধারণ মানুষ হতাহত হন। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ভবন ধ্বংস হয়, জরুরি সেবা ব্যাহত হয় এবং হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের রোমানিভকা গ্রাম দখলে নিয়েছে।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা এ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী দেশের নিষ্ক্রিয়তা পুতিনকে আরও আগ্রাসী করে তুলছে।
তিনি বলেন:
“রাশিয়ার প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার জন্য যথেষ্ট কারণ। কিন্তু আমরা সে নিষেধাজ্ঞা দেখতে পাচ্ছি না। ট্রাম্পের মতো নেতারা পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব দেখালে সে আরও সাহস পায়।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন থেকেই ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তার কিছুটা সহানুভূতিশীল মনোভাব ছিল বলে অভিযোগ করে আসছিলেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক। কিন্তু ইউক্রেনের সাম্প্রতিক এই ভয়াবহ পরিস্থিতি, এবং এর প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের ভাষ্য – যে “পুতিন পাগল হয়ে গেছেন” – তা যেন পূর্বেকার সেই ‘উষ্ণ সম্পর্ক’ থেকে একধরনের ছিন্নতা নির্দেশ করে।
এই মন্তব্য শুধু আন্তর্জাতিক কূটনীতি নয়, বরং মার্কিন রাজনীতিতেও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছর ঘনিয়ে এসেছে এবং ট্রাম্প পুনরায় হোয়াইট হাউসের দৌড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সূত্র:যুগান্তর
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই