গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা একটি যুগান্তকারী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, যা ওয়াশিংটনকে কিয়েভের বিরল খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার দেবে এবং সেই রাজস্বের অর্ধেক ব্যবহার করে যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেনকে পুনর্গঠনে তহবিল জোগাবে। কয়েক সপ্তাহ ধরে দু’দেশের পরস্পর মোকাবিলার পর অবশেষে এ সমঝোতা সম্পন্ন হওয়ায় দুই পক্ষই দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের নতুন ভিত্তি স্থাপন করেছে।
অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বের কাঠামো হিসেবে ‘যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ গঠন করা হবে। তহবিলের প্রথম দশ বছরে এর পুরো অর্থ সরাসরি ইউক্রেনে বিনিয়োগে ব্যয় হবে, পরবর্তী সময়ে উভয় দেশের অংশীদারদের মধ্যে লাভ ভাগ করে দেওয়া যাবে। বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে দুই দেশের সমান ভোটাধিকার থাকবে, যা অংশীদারিত্বের স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য বজায় রাখবে।
চুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো মার্কিন সংস্থাগুলোকে ইউক্রেনের টাইটানিয়াম, ইউরেনিয়াম, লিথিয়াম, গ্রাফাইট ও ম্যাঙ্গানিজসহ বিরল খনিজসম্পদে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুযোগ দেয়া। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত গুরুত্বসম্পন্ন এই সম্পদগুলোর উপর প্রবেশাধিকার পাবে, কিন্তু ইউক্রেন নিজে সার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং সম্পদ থেকে প্রাপ্ত আয়ের অর্ধেক বিনিয়োগ তহবিলে দান করবে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, “এই চুক্তি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বার্তা; কোনো তৃতীয় পক্ষকে ইউক্রেন পুনর্গঠনের তহবিল থেকে উপকৃত হতে দেয়া হবে না।” তিনি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন গড়ার শান্তি প্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, “আমরা শুধু বিনিয়োগই পাচ্ছি না; এমন কৌশলগত অংশীদার পাচ্ছি, যারা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহযোগী হবে।” ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মাইগাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “এ চুক্তি আমাদের ভূগর্ভস্থ সম্পদ, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পথে বাধা সৃষ্টি করবে না।”
মার্চে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উত্তপ্ত বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্ক কিছুক্ষণের জন্য থমেছিল, কিন্তু আজকের সমঝোতা তা কাটিয়ে অতীতের শীতলতা দূর করে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। চুক্তি এখন ইউক্রেনিয়ান পার্লামেন্টের অনুমোদন ও বাস্তবায়নের পর্যায়ে অপেক্ষারত, যা সফল হলে ইউক্রেনের পুনর্গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলবে।
সূত্র:সূত্র:প্রথম আলো
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই