কেন জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চাইলেন সারজিস?

জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি মত দিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা হলে, তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তার ফেসবুক পোস্টটি রাজনৈতিক মহলে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

সারজিস আলমের মূল বক্তব্যগুলো:

• স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হলে, ইশরাক হোসেনের মতো যোগ্য প্রার্থীরা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে অংশ নিতে পারবেন, যা সঠিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে সহায়ক হবে।
• বর্তমানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে—নির্বাচনের মাধ্যমে তা পুনরায় সচল হবে।
• জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট আয়োজন হলে, তা নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের জন্য একটি কার্যক্ষমতা যাচাইয়ের সুযোগ (লিটমাস টেস্ট) হবে।
• সরাসরি জাতীয় নির্বাচন হলে সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সংশোধনের সুযোগ থাকবে না, ফলে পুরো প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
• অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় ভোট হলে, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব কমে যাবে এবং প্রকৃত জনপ্রিয় প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
• এমন পদক্ষেপ বিএনপির মতো বড় দলগুলোর জন্যও প্রার্থী নির্বাচনে সহায়ক হবে এবং দুর্নীতিপরায়ণ বা চাটুকাররা বাদ পড়বে।
• জাতীয় নির্বাচনের তারিখ আগেভাগে ঘোষণা করা হলে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের জায়গা কমে যাবে।

সারজিস আলমের প্রস্তাবকে রাজনৈতিকভাবে যেমন সাহসী, তেমনি প্রশাসনিক দিক থেকে সংবেদনশীল বলছেন বিশ্লেষকরা। স্থানীয় নির্বাচনকে জাতীয় ভোটের পূর্বশর্ত হিসেবে দেখা হলে তা একদিকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারে, অন্যদিকে প্রশাসনিক প্রস্তুতিও শক্তিশালী হবে।

এই প্রস্তাব বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি গভীর আলোচনার দরজা খুলে দিয়েছে, যেখানে প্রশ্ন কেবল ভোট নয়, বরং রাজনৈতিক অন্তর্দৃষ্টির।