চার দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজপথে নেমেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাকরাইল মসজিদের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে পানির বোতল দেখা যায়, তারা সমস্বরে ‘বোতল-বোতল’ স্লোগান দেন। এ সময় তারা রশিতে ২০-২৫টি খালি বোতল বেঁধে তা ট্রাফিক সিগনাল লাইটের খুঁটিতে টানিয়ে দেন।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্যমতে, তাদের প্রতীকী এই কর্মসূচি একটি ‘বোতল নিক্ষেপ’ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের আচরণের প্রতিবাদে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তিনি শিক্ষার্থীদের কথা না শুনেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এবং পুলিশি হামলায় আহত শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ইতিহাস বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় কুমার রায় বলেন, “শুধু একটি বোতল ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা চলে যান। অথচ তার চোখের সামনে পুলিশ শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মারধর করেছে। রাষ্ট্রীয় পদে থেকেও তিনি অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। তার প্রতিবাদেই আমরা বোতল হাতে স্লোগান দিচ্ছি।”
গত বুধবার (১৪ মে) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় এক শিক্ষার্থী তার দিকে একটি পানির বোতল নিক্ষেপ করেন, যা গিয়ে উপদেষ্টার মাথায় লাগে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী হুসাইন স্বীকার করেন, “ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। আমি আকাশের দিকে বোতল ছুঁড়েছিলাম, ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে লক্ষ্য করে না। আমি কোনো ছাত্র সংগঠনের সদস্যও নই। আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
ঘটনাটি নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এটি ছিল একটি ‘নিকৃষ্ট ও অশোভন’ কাজ। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, “তাদের নির্দিষ্ট একজনের প্রতি আট মাস ধরে জমে থাকা হিংসা আজ বাস্তব আকারে প্রকাশ পেয়েছে।”
অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন দাবি করেন, বোতল নিক্ষেপের ঘটনার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী বা শিক্ষকরা জড়িত নন। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা মাহফুজ তার ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। তার মানসিক কাউন্সেলিং প্রয়োজন।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে এবং আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ। তারা বিশ্বাস করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে তাদের দাবিগুলো সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
সূত্র:কালবেলা