দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে খ্যাত এবি ব্যাংক পিএলসি খেলাপি ঋণের তথ্য গোপনের গুরুতর অভিযোগের মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিদর্শনে দেখা গেছে, ব্যাংকটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণের তুলনায় প্রায় ১৬ হাজার ১০ কোটি টাকা কম দেখিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, এবি ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৩১ হাজার ৭১২ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২১ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা অর্থাৎ ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত। তবে ব্যাংকটির দেওয়া আর্থিক বিবরণীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
এ ব্যাপারে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল বলেন, ‘আমাদের মন্দ ঋণ রয়েছে, তবে সেটি ৬৭ শতাংশ নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরীক্ষা ছাড়াও আমাদের নিজস্ব অডিট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এত বড় অঙ্কের পার্থক্য হওয়ার কথা নয়।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরও দেখা যায়, স্ট্যান্ডার্ড (ভালো মানের) ঋণের পরিমাণ ব্যাংকের হিসাবে দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, অথচ প্রকৃত পরিমাণ ১০ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে গরমিল ১৫ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া এসএমএ, সাবস্ট্যান্ডার্ড, ডাউটফুল ও লস ক্যাটাগরির ঋণের পরিমাণেও বিপুল অঙ্কের গড়মিল পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ব্যাংকের আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রুটিন পরিদর্শনে ধরা পড়ে। কেউ নিয়ম ভেঙে ব্যাংক চালাতে পারবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তালিকাভুক্ত ব্যাংকের এমন আর্থিক কারসাজি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে। এ ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।
সংগৃহিত প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না