বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুরের প্রীতি ম্যাচকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) প্রথমবারের মতো অনলাইন টিকিট বিক্রির উদ্যোগ নিলেও তা রূপ নিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলায়। গত মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেল ৫টা ৫৬ মিনিটে বাফুফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ঘোষণা আসে, ম্যাচের সব টিকিট ‘সোল্ড আউট’। তবে তার আগেই হাজারো ফুটবলপ্রেমী টিকিট কাটতে গিয়ে অসহায়তা, ক্ষোভ ও ভোগান্তির শিকার হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগীদের অভিব্যক্তি যেন ক্ষুব্ধ এক চিত্রপট। তানভীর ইসলাম নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘কালকে পুরা রাত বসেও টিকিট পাই নাই।’ ফায়জুল হক মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে যে সময় ছাড়ে, সার্ভারে সমস্যা। আর এখন টিকিট শেষ।’ অন্যদিকে রুহুল আমিন জানান, ‘টানা তিন দিন শত চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি।’
বাফুফে অনলাইন টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দিয়েছিল টিকিফাইডটলাইভ নামক একটি ওয়েবসাইটকে। কিন্তু শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। শনিবার (১৮ মে) দুপুর ১২টায় বিক্রি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা বারবার পিছিয়ে রাত ৮টায় নেওয়া হয়। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না, যারা প্রবেশ করছিলেন তারাও টিকিট কাটতে পারছিলেন না।
প্রথম দিনেই দুবার সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে বাফুফে দাবি করে, কিন্তু এরপরও বিক্রির পদ্ধতি বা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো উন্নতি হয়নি। সোমবার রাত ১০টায় পুনরায় টিকিট বিক্রি শুরুর ঘোষণা দেওয়া হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, বরং বেড়েছে ভোগান্তি।
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে দেখা যাচ্ছিল, “আপনি এখন লাইনে আছেন। ধৈর্য ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার আনুমানিক অপেক্ষার সময় ২ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট।” কারো কারো ক্ষেত্রে এই সময় ৪-৫ ঘণ্টায়ও পৌঁছায়। অনেকেই রাত ১০টা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও টিকিট পাননি।
বাফুফের কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস বলেন, “কষ্ট করে হলেও মানুষ টিকিট কিনতে পারছেন। এটা তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।” তবে ঠিক কতগুলো টিকিট বিক্রি হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
বাফুফের এই উদ্যোগ নতুন হলেও প্রস্তুতির অভাব ও প্রযুক্তিগত অদক্ষতা প্রশ্ন তুলেছে তাদের পরিকল্পনা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে। ফুটবলপ্রেমীরা এটিকে নিছক ‘প্রযুক্তিগত সমস্যা’ না বলে বরং ‘ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা’ হিসেবে দেখছেন। বহু উৎসাহী দর্শক ম্যাচটি মাঠে বসে উপভোগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অনলাইনে এক টিকিটও না পেয়ে ফিরে গেছেন হতাশ হয়ে।