শিক্ষার্থীদের পাশে ছাত্রশিবির, ডাকসু নিয়ে আলোচনায় নতুন গতি
সরদার আব্বাস উদ্দিন
এডভোকেট, জজ কোর্ট, ঢাকা
বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি এখন সরগরম নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে। নির্বাচন আগে নাকি সংস্কার আগে সেই বিতর্কে জড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। প্রকাশ্যে কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছেন নেতা থেকে শুরু করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এরমধ্যেই নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই ডাকসু নির্বাচনের বিষয়টি সর্বত্র প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন, যার মাধ্যমে পুনরায় সচল হয় ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রতি বছর নির্বাচন হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পাঁচ বছরে আর কোনো নির্বাচন আয়োজন করেনি। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের রোড ম্যাপ প্রকাশ করেছে, যা মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তবে ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ বা তফশিল ঘোষণা না থাকায় ছাত্র সংগঠনগুলো এতে হতাশা প্রকাশ করেছে।
তবে ঢাকসু নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে একাধিক ছাত্রবান্ধন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। বিএনপি সংস্কার ও বিচারের বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করলেও তাদের অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগেই সংস্কার এবং বিচারের দাবীতে সোচ্চার। ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতা গণমাধ্যমে বলেন,"যৌক্তিক সংস্কার এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হামলাকারী ছাত্রলীগ এদের বিচারের পূর্বে কোন ধরনের নির্বাচন উপযুক্ত মনে করছি না। এই বিষয়গুলোর আগে সুরাহা করতে হবে। তাছাড়া দীর্ঘ সতেরো বছর আমরা ক্যাম্পাসের বাইরে। আমাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক এবং জানাশোনার জন্যও সময় প্রয়োজন। একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তখনই সম্ভব।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য অবশ্য ভিন্ন। তারা মনে করছে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে গেলে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হবে, যারা গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় ভূমিকা রাখবে। সম্প্রতি এক সংলাপে এমন বক্তব্যই তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা। তিনি বলেন "জাতীয় নির্বাচনের আগেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়া জরুরি। কারণ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে নেতৃত্ব উঠে আসবে, তারা হবে আমাদের গণতন্ত্রের সেইভগার্ড (রক্ষাকবচ)। এই সেইভগার্ড নিয়েই আমরা জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাবো, গণতান্ত্রিক একটা পরিবেশে আমরা সব পক্ষই প্রবেশ করবো।"
ডাকসুতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রস্তুতি নিয়ে শিবিরের এক নেতা বলেন, "ছাত্র কল্যাণমূলক কাজ আমাদের নিয়মিত সাংগঠনিক কাজের অংশ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আমাদের নিয়মিত কাজের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা পলিসিগত প্রস্তুতির বিষয়ে কাজ করছি। সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে আমরা আমাদের প্রস্তুতি সামনে নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।" ছাত্রশিবির ঢাবি শাখার অপর এক নেতা বলেন, "ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপ্রয়োজনীয় সময় নিচ্ছে বলে আমরা মনে করি। সদিচ্ছা থাকলে আরো কম সময়ে নির্বাচনের সব আয়োজন সম্পন্ন করা সম্ভব ছিল। বিশেষত নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো আমরা জানতে পারিনি যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অবশ্যই দ্রুত সময়ের ভেতরে ডাকসু নির্বাচন চাই।"
এদিকে ডাকসু সভাপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, দুটি নতুন পদ সৃষ্টিসহ ৯ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। নির্বাচিত কমিটির সময়কাল ৩৬৫ দিন ও পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার বিষয়টি গঠনতন্ত্রে যুক্ত করা, ডাকসুর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, ডাকসুর কার্যাবলী, সভাপতির ক্ষমতা সীমিতকরণ, সম্পাদকীয় পদের পরিবর্তন-পরিমার্জন ও সংযোজন, মেয়াদ শেষ হওয়ার সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা, ডাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধনের এখতিয়ার ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে প্রদানসহ বেশ কিছু সংস্কার চায় শিবির।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ভিন্ন-ভিন্ন মতামত থাকলেও জুলাই গণবিপ্লবের পরে ছাত্রবান্ধন একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাদের মতে, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বাংলাদেশের প্রচলিত মূলধারার অন্যান্য রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ফ্রেমওয়ার্কে ডিফাইন করলে ভুল হবে। ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক সংগঠন। এখানে মাঠে ময়দানে শক্তি প্রদর্শন কিংবা কারো ভ্যানগার্ড হওয়ার কোনো চর্চা নেই। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের জায়গায় আদর্শিক বোঝাপড়া রয়েছে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল-জনশক্তিদের মধ্যে। সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনের যে প্রকল্প তার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘমেয়াদি এবং এর ফলাফলও সুদূরপ্রসারী। সংগঠনের জনশক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্রদের প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় টিকে থাকার উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের রয়েছে নানা আয়োজন। নির্দিষ্ট কোন স্কুল অফ থ্যট নয়, বৈচিত্র্যময় জ্ঞানের জন্য রয়েছে পড়াশোনা। শৈশব থেকে যুবক বয়স পর্যন্ত, গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছাত্রদের রুচি, চরিত্র ও সৃজনশীলতার বিকাশে শিবিরের যথাসাধ্য চেষ্টা থাকে। সাহিত্য সংস্কৃতি ও অন্যান্য মননশীল সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও রয়েছে ব্যাপক উপস্থিতি। তাছাড়া সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিকভাবে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
১) মেডিকেল ক্যাম্প
ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সাত দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছে শিবিরের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘শিফা স্টুডেন্টস হেল্থ ইনিসিয়েটিভ ফর অল’। ক্যাম্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের মেডিসিন, গাইনি, চর্ম ও দন্ত বিভাগের প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। শিফার এমন অসাধারণ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
২) ভর্তিচ্ছুদের সহায়তা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য তথ্যসেবা কেন্দ্র, মেডিকেল টিম, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, গার্ডিয়ান লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সেবা নিয়ে পাশে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় শিবিরের পক্ষ থেকে ৬টি ইনফরমেশন বুথ ও ৩টি অভিভাবক লাউঞ্জ বসানো হয়। ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, "বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির যখনই সুযোগ পেয়েছে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। আমরা এবারের মতো ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, অভিভাবকদের জন্য নিরাপদ বসার স্থান, মেডিকেল টিম, পর্যাপ্ত পানি, কলমসহ বিভিন্ন সেবা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থান নিয়ে সহায়তা করছি। এভাবে আমাদের নানা উদ্যোগ নিয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীসহ রানিং শিক্ষার্থীদের জন্য নানা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।"
৩) ইফতার বিতরণ কর্মসূচি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগ ও ফ্যাকাল্টির শিক্ষার্থীরা জমায়েত হন এই ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠানে। শিবিরের এই আয়োজনের মাধ্যমে ছাত্রদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ আরো প্রগাঢ় হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের ইফতার আয়োজন একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করে অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার মধ্যে মানবিকতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
৪) শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা অনুষ্ঠান ‘দুর্বার ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী (শারীরিক প্রতিবন্ধী) শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজের মূলধারায় যাতে সম্পৃক্ত হতে পারে সে ব্যাপারে ছাত্রশিবির সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে।দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধিকার বাড়াতে এবং সাধারণ মানুষ যেসব সুবিধা পায় সেগুলো নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে ৬টি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের ছাত্রকল্যাণ, ছাত্র অধিকার এবং মানবাধিকার বিভাগ যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে।
৫) সায়েন্স ফেস্ট
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বাস্তবজীবনে বিজ্ঞান চর্চাকে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজন করে ‘ইবনে আল-হাইসাম সায়েন্স ফেস্ট ২০২৪’। ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। ফেস্টে অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিলো ইনস্ট্যান্ট প্রবলেম সলভিং ও পুরস্কার, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও অ্যাস্ট্রোনমি বুথ, সায়েন্টিফিক ডকুমেন্টারি শোয়িং, ক্যারিয়ার বুথ ইত্যাদি।
শুধু জুনিয়র সায়েন্টিস্ট হান্ট ও রুবিক্স কিউবে রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে থাকে টি-শার্ট, সকালের নাস্তা ও মধ্যাহ্নভোজ, সার্টিফিকেট, মেডেল এবং ক্রেস্ট।
আয়োজন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, "শিবির এই দেশকে নিয়ে অনেক উঁচুতে স্বপ্ন দেখে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে চায়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জামানায় টিকে থাকতে হলে বিজ্ঞানচর্চার বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই শিবির আয়োজন করছে ‘ইবনে আল-হাইসাম সায়েন্স ফেস্ট ২০২৪’। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ হোক অন্যতম অংশীদার।"
তিনি আরও বলেন, "এই উৎসব ঢাকার শাখাগুলো আয়োজন করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে আমরা সব লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছি।"
৬) শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন
২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-২০২৪’ শীর্ষক স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সকল মানুষকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের লেখা অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট স্মৃতিচারণমূলক, যা নিজের সাথে ঘটে যাওয়া বা নিজ চোখে দেখা ঘটনা কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দির মাধ্যমে উঠে আসা ঘটনার ওপর ভিত্তি করে সেরা লেখা নির্বাচন ও বিজয়ীদের পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
এছাড়াও পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে টিএসসি চত্বরে ‘নূর-ই-রমজান’ উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন ক্যাম্পাসে 'প্রকাশনা উৎসব' আয়োজনে সহযোগিতা, বিভিন্ন হলে ছাত্রদের জন্য নানামুখী কার্যক্রম, জাতীয় দিবসে ছাত্রকল্যাণমুখী কর্মসূচি, নিয়মিত ডিবেট অধিবেশনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি হয়ে তাদের কথা শোনা। এমন নানামুখী উদ্যোগের সঙ্গে ছাত্রশিবির সম্পৃক্ত থাকায় আগামী ডাকসু নির্বাচনে ফলাফল নিজেদের ঘরে তুলবেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। জুলাই গণবিপ্লবে তারুণ্যের আদর্শ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীনতা, সাহসিকতা, লড়াকু ইত্যাদি স্মৃতির সাথে দেশবাসী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেইসাথে ছাত্ররাজনীতির অতীত ইতিহাসের সাথে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভর্তিবাণিজ্য, সিটবাণিজ্য, কমিটিবাণিজ্য ইত্যাদির যোগসূত্র থাকায় পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব বিকাশের একটি পন্থা হিসেবে ডাকসুতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বিবেচিত হতে পারে বলে বিশ্বাস স্থাপন করাই যায়।
তথ্যসূত্রঃ জাতীয় দৈনিক ও গুগল উইকিপিডিয়া
নিন্দার কাঁটা ও আদর্শবাদী এক্টিভিজম - ওয়াজ কুরুনী সিদ্দিকী
কা'বা দর্শণ আল্লাহর এক নিয়ামত : অধ্যাপক আবুল খায়ের নাঈমুদ্দীন
যাকাত ও সাদাকা : দারিদ্র্য বিমোচনের মানবিক সমাধান
যাকাতের মাধ্যমেই দেশ হতে পারে স্বনির্ভর - আবুল খায়ের নাঈমুদ্দীন