কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর প্রভাব এবার সরাসরি এসে পড়েছে ক্রিকেট অঙ্গনে। আগস্টে নির্ধারিত ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
চূড়ান্ত সূচি অনুযায়ী, ১৭ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে আসার কথা ছিল রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদবদের। তবে সীমান্ত উত্তেজনা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনও সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিসিসিআইয়ের দোটানা
ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিসিসিআই বাংলাদেশ সফর নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। বোর্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “পরিকল্পনা অনুযায়ী সফর হওয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। সফর বাতিল হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”
বিতর্কিত মন্তব্যে নতুন জটিলতা
সাবেক বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমানের একটি সামাজিকমাধ্যম পোস্টে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, “ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করলে বাংলাদেশের উচিত হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য দখল করা।” তিনি চীনের সঙ্গে যৌথ কৌশলগত উদ্যোগের কথাও বলেন।
এই বক্তব্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এটি ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করে দায় এড়ানো হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “সরকার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় এবং এটি ব্যক্তিগত মতামত।”
এশিয়া কাপ ২০২৫ নিয়েও শঙ্কা
ভারত যদি বাংলাদেশ সফর বাতিল করে, তাহলে এর প্রভাব পড়তে পারে এশিয়া কাপ ২০২৫ আয়োজনেও। পাকিস্তানে খেলতে রাজি নয় ভারত, আবার পাকিস্তানও ভারতকে আয়োজক হিসেবে মানতে নারাজ। বাংলাদেশ ছিল সম্ভাব্য নিরপেক্ষ ভেন্যু। কিন্তু ভারতের অনাস্থা থাকলে তা আর সম্ভব নাও হতে পারে।
উপমহাদেশীয় ক্রিকেট কাঠামোয় ঝড়
ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক টানাপোড়েন এখন সরাসরি প্রভাব ফেলছে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেট রাজনীতিতে। বাংলাদেশ সফর বাতিল হলে শুধু দুই দেশ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরো অঞ্চল এবং ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ক্রিকেট যেন রাজনীতির বলি না হয়—এটাই এখন ভক্তদের প্রধান প্রত্যাশা।