মোঃ আবু তালেব
সাবেক সভাপতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
সাতক্ষীরা শহর শাখা।
আজ ইসলামী ছাত্রশিবির সাতক্ষীরা শহর শাখার সাবেক সেক্রেটারি শহীদ আমিনুর ভাইয়ের শাহাদত বার্ষিকী।
পুলিশের কাছে আমিনুর ভাই নাম-ঠিকানা ও শহর সেক্রেটারী পরিচয় দেওয়ার সাথে সাথে পিস্তল দিয়ে বুকে ধাক্কা দেয় এবং বলে তুই কি পিস্তল ব্যবহার করিস, তোর কাছে পিস্তল থাকে, কই?
হঠাৎ বাহিরে গুলির শব্দ। তারা বলে ঐ তোদের লোকজন গুলি করছে।
মুহুর্মুহু গুলির শব্দ, আমার বুঝতে বাকি রইল না বড়ো কোন ঘটনা *(নাটক) অপেক্ষমান। প্রথমে আমাকে চোখ বেধে বাহিরে নিয়ে গেল। আমিনুর ভাই বললো ভাইকে বাহিরে নিয়ে যাচ্ছে মেরে ফেলতে পারে। প্রচন্ড গুলির শব্দের মাঝে হটাৎ চিৎকার শুনলাম, অনুমান করলাম কাউকে গুলি করছে।
এক এক করে সকলের পায়ে গুলি করলো। সকলের আর্তচিৎকারে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠলো। সর্বশেষ আমার পায়ে একটা গুলি করলো, ২য় গুলির পরে নিজেকে দাড় করে রাখতে পারলাম না, পড়ে গেলাম ।
মনে হলো এটা যুদ্ধক্ষেত্র। মাত্র ১০ মিনিটে প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি করেছে। আমার চোখের বাঁধন খুলে দিয়ে হাতে পিস্তল দিয়ে ছবি তুললো। আমি ঘরের ভিতর ও বাহিরের পরিবেশটা দেখার চেষ্টা করলাম। বাহিরে তাকাতেই চোখ দাড়িয়ে গেল। আমিনুর ভাইয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে। আমিনুর ভাইকে ৪ জন হাত-পা ধরে বাহিরে নিচ্ছে। আমি বুঝে ফেললাম আমিনুর ভাই শাহদাৎ বরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ) নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না ।
অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রিয় ভাইকে দেখে নিলাম। মনে হলো পৃথিবীর সব থেকে ভারী বোঝা আমার কাঁধে। নিজের কাছে ব্যর্থ দায়িত্বশীল বলে মনে হলো। আমার চোখের সামনে আমার সেক্রেটারী শাহদাৎ বরণ করেছে।
এক এক করে ৭ জন (আজিজুল ইসলাম ফারাজী , আমি, ইমরান হোসেন, আব্দুল গফুর, আক্তারুজ্জামান, নূর মোহাম্মাদ (বয়স ১৮) এবং আবদুস সবুর (বয়স ১৭) পুলিশের কাঁধে ভর করে এ্যাম্বুলেন্সে উঠলাম। ফারাজী ভাই এ্যাম্বুলেন্সে উঠার পরে বললো আপনি আছেন? আমি ভাবলাম আপনি নেই। আমি বললাম, আমিনুর ভাই নেই।
আমিনুর ভাইকে যখন আমাদের সাথে এ্যাম্বুলেন্সে নিলোনা তখন শাহদাতের বিষয়টা ১০০% নিশ্চিত হলাম। যে ভাইটি আমাকে না বলে খাবার খেত না। সেই ভাইটি আমাকে না বলে চলে গেলো না ফেরার দেশে।
(প্রথম ছবিতে শহীদ আমিনুর রহমান।
দ্বিতীয় ছবিতে ছাত্রশিবির তৎকালীন খুলনা মহানগরীর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, লেখক আবু তালেবসহ দায়িত্বশীলগণকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।)
সংগৃহিত প্রতিবেদন
অসমাপ্ত জুলাই বিপ্লব পূর্ণ করুন : মাহমুদুর রহমান
বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা নয় সম্পদ
কথা বললে গ্রেপ্তার, প্রতিবাদ করলে গুম আর রাজপথে নামলে গুলি - এই নিয়মে মিশরে ৩০ বছর স্বৈরশাসন চালান হোসনি মোবারক।
গণঅভ্যুত্থানোত্তর সময়েও জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উদযাপনের দায়সারা প্রস্তুতি!