ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর মাধ্যমে ইরানের ওপর ব্যাপক হামলায় রাশিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। রুশ কর্মকর্তারা এ পরিস্থিতিকে “উদ্বেগজনক” ও “বিপজ্জনক” বলে মন্তব্য করলেও, শুরুতে রুশ সংবাদমাধ্যমগুলো এতে সম্ভাব্য কিছু সুফলের ইঙ্গিত দিয়েছিল।
সম্ভাব্য সুফল যেগুলোর কথা রুশ মিডিয়ায় উঠে এসেছিল:
* বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে রাশিয়ার অর্থনীতিতে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা।
* ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বৈশ্বিক মনোযোগ সরে যাওয়া।
* এই সংঘাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলে রাশিয়া নিজেকে একটি প্রধান শক্তি এবং শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ পাবে।
কিন্তু বাস্তবতা রাশিয়ার জন্য দিন দিন কঠিন হচ্ছে। রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্দ্রে কোরতুনভ পত্রিকায় লিখেছেন, “রাশিয়া ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ মাত্র পাঁচ মাস আগেই তেহরানের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করেছিল মস্কো।”
পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিটি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব, কিন্তু সামরিক জোট নয়। তাই তেহরানের প্রতিরক্ষায় রাশিয়ার সেনা পাঠানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে, চুক্তি স্বাক্ষরের সময় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, “আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় সহযোগিতা বাড়াতে রাশিয়া ও ইরান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতা হারানোর পর রাশিয়া তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে। এখন যদি ইরানেও সরকার পতনের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।
মস্কোভস্কি কমসোমোলেটস পত্রিকা মঙ্গলবার বলেছে, “বৈশ্বিক রাজনীতিতে এই মুহূর্তে এমন পরিবর্তন ঘটছে যা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার ওপর প্রভাব ফেলবে।”
বর্তমানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থান করছেন, যেখানে বার্ষিক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠক হবে। একসময় যাকে বলা হতো “রাশিয়ার ডাভোস”, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর সেটির গুরুত্ব অনেক কমে গেছে।
তবে আয়োজকদের দাবি, এবার ১৪০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।
এমন উত্তাল সময়ে এই ফোরাম কেবল অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনেরও এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
বিশেষ করে, পুতিন মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউক্রেন নিয়ে কী বলেন — সেটাই এখন পর্যবেক্ষকদের নজর কাড়ছে।
রাশিয়ার অবস্থান এই দ্বন্দ্বে নিরপেক্ষ না কৌশলগত — সেটি বুঝে উঠতে বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে ক্রেমলিনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাল যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বৈঠক
ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, ইসরায়েল তাকে ‘হত্যার’ চেষ্টা করেছে
খাদ্যের জন্য মৃত্যুকে উপেক্ষা করে গাজায় ক্ষুধার্ত নারী-পুরুষ-শিশুর লড়াই