যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন ফের উত্তেজনার নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের শঙ্কা, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ও ইসরায়েলের প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন—এই দ্বন্দ্ব দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।
সম্প্রতি ইরানের এলিট বিপ্লবী বাহিনী 'কুদস ফোর্স'-এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানি এক বিস্ফোরক বক্তব্যে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল প্রচার, প্রভাব ও প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও ইরান ও প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিরুদ্ধে কার্যত অকার্যকর।” তিনি দাবি করেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে, তা বুঝে ওঠা সম্ভব নয় পশ্চিমাদের পক্ষে।
গত বছর ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলে চালানো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে প্রতিশোধমূলক উল্লেখ করে তিনি জানান, তখন ইরান তাদের সামরিক শক্তির মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশই ব্যবহার করেছিল।
এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড কোর সম্প্রতি একটি ভূগর্ভস্থ 'মেগা' ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি প্রকাশ্যে এনেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা সক্ষমতার প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরী জানান, “শত্রুরা যত দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তার চেয়েও দ্রুত আমরা শক্তি অর্জন করছি।”
জেনারেল কানি আত্মনির্ভরশীলতা ও দেশীয় প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আঞ্চলিক প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “যেমন লেবানন ও ইয়েমেনের যোদ্ধারা স্বল্প সম্পদে শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তেমন উদাহরণ বিরল।”
তিনি যোগ করেন, “প্রতিরোধ ফ্রন্টকে দমন করতে গেলেই সেটি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।” ইয়েমেনি যোদ্ধাদের সাফল্য তুলে ধরে কানি বলেন, “যারা শুরুতে শত্রুপক্ষের নাগালেই পৌঁছাতে পারত না, তারা এখন তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৬০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটারে উন্নীত করেছে।”
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকগণ সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে ইরানের প্রতিক্রিয়া আরও জটিল ও বিস্তৃত হতে পারে। ইয়েমেন বিষয়ক বিশ্লেষক আহমেদ নাগী সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি মনে করে কেবল বিমান হামলা চালিয়ে ইয়েমেনিদের দমিয়ে রাখা যাবে, তবে তারা ভুল করছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিরোধ শক্তির জন্য এই সংঘাত যেন একটি আত্মিক অনুপ্রেরণা। যুদ্ধকে তারা ভীতির নয়, বরং প্রতিরোধের মাধ্যম হিসেবে দেখছে।”
ক্ষুধায় ধুঁকছে গাজা, মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই—শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ জনের মৃত্যু
গ্রেফতারি আবেদন শুনেই লন্ডন ছাড়লেন ইসরায়েলি মন্ত্রী
বাংলাদেশের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ ইস্যুতে কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মানেনি হামাস
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না