অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক টেলিভিশন আলোচনায় বামপন্থী রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেন, বামদের প্রভাব থাকলে দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।
“বামরা বাংলাদেশকে বনসাই বানাতে চায়”
আলোচনায় অংশ নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “বামদের দ্বারা ইনফ্লুয়েন্সড হলে বাংলাদেশে জব হবে না। বাংলাদেশকে উনারা বনসাই বানিয়ে রাখতে চান।”
তিনি অভিযোগ করেন, বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রামের নিউমোরিং টার্মিনাল ও বিদেশীদের ইজারাসংক্রান্ত ইস্যুতে অযৌক্তিকভাবে বিক্ষোভ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
“চট্টগ্রাম পোর্টের এফিসিয়েন্সি ছাড়া রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অসম্ভব”
বাংলাদেশের রপ্তানি নির্ভর প্রবৃদ্ধির প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “চট্টগ্রাম পোর্ট এফিসিয়েন্ট না করতে পারলে বাংলাদেশে কোনো জব তৈরি হবে না।”
তার মতে, বাংলাদেশে খনিজ সম্পদের অভাব থাকলেও রপ্তানি ভিত্তিক প্রবৃদ্ধির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরকেই “ইকোনমিক হৃদস্পন্দন” হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা যদি এক্সপোর্ট ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০০ বিলিয়নে নিতে চাই, সেটা চট্টগ্রাম পোর্ট দিয়েই সম্ভব।”
“বিশ্বমানের কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে সরকার”
শফিকুল আলম জানান, সরকার নিউমোরিং, বে টার্মিনাল ও লালদিয়ার চরসহ নতুন টার্মিনাল উন্নয়নে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ড্যানিশ কোম্পানি এপি মোলার মার্স্ক-এর কথা, যারা বিশ্বের ৭০-৮০টি টার্মিনাল পরিচালনা করে।
“ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট দেশ হয়েও বাস্তববাদী”
বাম রাজনীতির সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি উদাহরণ টানেন ভিয়েতনামের—“ভিয়েতনাম একটা কমিউনিস্ট কান্ট্রি হয়েও তারা বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছে। তারা বিশ্বমানের কোম্পানিকে দিয়ে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমাদের বামদের উচিত ভিয়েতনাম ঘুরে দেখা।”
“ছোটখাট কোম্পানি নয়, বিশ্বের সেরা অপারেটরদের সঙ্গে কাজ”
আলোচনার এক পর্যায়ে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা কোনো থুরি বুড়ি বা ছোটখাট কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছি না। আমরা কথা বলছি বিশ্বের বড় পোর্ট অপারেটরদের সঙ্গে। তারা অনেক দেশে সফলভাবে পোর্ট পরিচালনা করছে। আমরাও তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চাই।”
এই আলোচনা স্পষ্ট করে দেয়, সরকার চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি উচ্চাভিলাষী রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কৌশল নিতে চলেছে, এবং সেই পথে বামপন্থীদের প্রতিবাদকে তারা অগ্রগতির অন্তরায় হিসেবে দেখছে।