পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবিরের স্ত্রীর সাথে রাজিব নামে এক যুবকের পরকীয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ মনোমালিন্য চলছিল। একাধিকবার এই বিষয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শালিস-বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার, শেষ বারের মতো পারিবারিক বৈঠকে স্বামী হুমায়ুন কবির ও স্ত্রী সালমা আক্তারের সাথে মিমাংসা হয়। তবে, সালমা তার প্রেমিক রাজিবকে ছাড়তে পারবে না এবং এই বিষয়ে কোনো কিছু প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে তার মনে একটি পরিকল্পনা গড়ে ওঠে, যেখানে তিনি স্বামীকে হত্যা করে প্রেমিক রাজিবকে বিয়ে করবেন।
শালিসের আগেই সালমা তার আত্মীয় মরিয়ম আক্তারের বাসায় বরিশাল থেকে দুই ভাড়াটে খুনিকে পাঠান। তারা সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেন এবং হত্যার জন্য প্রস্তুতি নেয়। ২৭ এপ্রিল রাতে পুলিশ কনস্টেবল হুমায়ুন কবির বাসায় ফিরে আসলে, স্ত্রী সালমা তাকে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নিজ হাতে ভাত খাওয়ান। এরপর হুমায়ুন অস্বস্তি অনুভব করলে তাকে লেবুর শরবত খাওয়ানো হয়। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে হুমায়ুন অচেতন হয়ে পড়লে, সালমা বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে খুনিদের কাছে পাঠান।
রাত ১২টা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে খুনিরা প্রথমে হুমায়ুনকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর তারা তার মরদেহ চার তলা থেকে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী স্ত্রীর নাম সালমা বেগম এবং তার আত্মীয় মরিয়ম আক্তারকে গ্রেফতার করে। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে যে, স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়ে স্বামী হুমায়ুন কবির জানতে পেরেছিলেন এবং তার সন্দেহ বাড়ছিল। এতে তাদের মধ্যে কলহ চলছিল। স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের কারণে হুমায়ুন আবার রাজিবের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। পরবর্তীতে, স্ত্রী তার প্রেমিক রাজিবকে বিয়ে করার জন্য পরিকল্পনা করেন এবং ৮-১০ দিন আগে থেকেই হত্যার জন্য খুনি ভাড়া করার ব্যবস্থা করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দুই লাখ টাকায় খুনিদের ভাড়া করা হয়েছিল। খুনিরা পালানোর আগে ১৬৪ ধারায় আদালতে তাদের জবানবন্দি দেয়। তাদের নাম শুভ এবং রাফি, যারা দিনমজুরের কাজ করতেন এবং এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ড প্রথমে আত্মহত্যা মনে হলেও পুলিশ তদন্তে জানতে পারে যে এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পর খুনিরা এবং হত্যার পেছনের মাস্টারমাইন্ডরা গ্রেফতার হয়ে আদালতে তাদের স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
সূত্র:নয়া দিগন্ত
শহীদ আলিফ আহম্মেদ সিয়াম-এর কবর জিয়ারত করলেন বাগেরহাটের জামায়াতের নেতৃবৃন্দ
গণঅভ্যুত্থান স্মরণে বাগেরহাটে শহীদ পরিবারে সাক্ষাৎ ও কবর জিয়ারত কর্মসূচি
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার
আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার মধ্যেই নিহিত এতিম লালন-পালনের স্বার্থকতা - ধর্ম উপদেষ্টা