মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন এক নতুন নির্দেশনার আওতায় বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে শিক্ষার্থী ভিসা (F-1) ও বৈদেশিক বিনিময় কর্মসূচি (J-1)-র সাক্ষাৎকার কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আরও গভীর যাচাই-বাছাই চালানোর পরিকল্পনা, যা ট্রাম্প প্রশাসনের নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতির আরও এক কঠোর রূপ।
সরকারি নির্দেশনায় যা বলা হয়েছে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কর্তৃক দূতাবাসগুলোতে পাঠানো একটি চিঠিতে জানানো হয়েছে,
“পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভিসা সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে যে, এই স্থগিতাদেশ "সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যাচাই কার্যক্রম বৃদ্ধির" অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোর প্রশাসনিক ব্যস্ততা ও চাপ বাড়াবে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক তীব্রভাবে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসনের অভিযোগ, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকেই "বামপন্থী আদর্শ" প্রচার করে এবং রক্ষণশীল মূল্যবোধকে অবজ্ঞা করে।
বিশেষ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির নীতিতে ধারাবাহিকভাবে কড়াকড়ি আরোপ করে আসছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এই নীতির আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত ও জটিল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্ভাব্য প্রভাব
এই পদক্ষেপ শুধু নিরাপত্তাজনিত নয়, বরং এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই অভিবাসন নীতিকে কঠোর করে, অভিবাসীদের প্রতি কঠোর মনোভাব পোষণ করছে। শিক্ষার্থী ভিসার মতো তুলনামূলক "নরম" অভিবাসন চ্যানেলেও নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো সেই নীতিরই সম্প্রসারণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিনিময় সবসময়ই কূটনৈতিক বন্ধুত্বের ভিত্তি তৈরি করে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ওপেন এক্সচেঞ্জ কালচারের পরিপন্থী হিসেবে সমালোচিত হতে পারে।
এই স্থগিতাদেশ দীর্ঘস্থায়ী হলে, তা যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র:বিবিসি