মুসলিম বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে ইহুদি উপাসনালয় 'থার্ড টেম্পল' নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েলের অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা। হিব্রু ভাষার বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে সক্রিয় আলোচনা চলায় সতর্ক বার্তা দিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়।
এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ফিলিস্তিন সরকার জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানায়, এটি মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের পবিত্র স্থানের ওপর একটি বিপজ্জনক উসকানি। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দখলদারদের এধরনের আচরণের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তারা আহ্বান জানায়।
আল-আকসা ঘিরে উত্তেজনা
জেরুজালেমের স্থিতি অনুযায়ী, অমুসলিমদের আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনা নিষিদ্ধ থাকলেও ইসরায়েলি সুরক্ষায় বহু বসতিস্থাপনকারী নিয়মিত সেখানে প্রবেশ করে এবং প্রার্থনায় অংশ নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে এসব উসকানি ঘটনা বৃদ্ধির মধ্যেই মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনার বিষয়টি সামনে এসেছে।
গাজায় অব্যাহত হামলা, নিহত ৬৪
একই দিনে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৪ জন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। শুক্রবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চালানো এসব হামলার বেশিরভাগই গাজা সিটি ও উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত হয়।
বর্তমানে দক্ষিণ গাজার রাফা অঞ্চলের শাবৌর ও তেল আস সুলতান এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করে সেখান থেকেই অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। শুক্রবার ছিল খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় দিন 'গুড ফ্রাইডে', যেখানে গাজার খ্রিষ্টানরা অনাড়ম্বরভাবে প্রার্থনায় অংশ নেন। স্থানীয় খ্রিষ্টান ইহাব আয়াদ জানান, এবার তাদের অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজন গৃহহীন, বহুজন নিহত।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ হাজার, এবং আহত ১ লাখ ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যার মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। গাজার মিডিয়া অফিস দাবি করেছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াদের হিসাবসহ।
হামাসের অবস্থান
হামাসের নেতা খলিল আল-হায়া এক টিভি ভাষণে বলেন, তারা আর 'আংশিক যুদ্ধবিরতি'তে আগ্রহী নয়। পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় ও গাজার পুনর্গঠন ছাড়া তারা কোনো আলোচনায় যাবে না। ইসরায়েলের অন্তর্বর্তী প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হামাস ‘সমাধানভিত্তিক চূড়ান্ত আলোচনার’ কথা বলেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, “হামাস শান্তি নয়, চিরস্থায়ী সহিংসতা চায়।” অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাজ বলেন, “হামাসকে পরাজিত করা ও জিম্মিদের মুক্ত করা—এই দুই লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।”
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মুসলিম ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে আল-আকসা মসজিদ নিয়ে সম্ভাব্য উসকানি গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা
যশোরে ইবনে সিনা হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার
জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের আপিল শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হলো
উত্তরা, আগারগাঁও ও কচুক্ষেতে ‘জোরপূর্বক গুম’ তদন্তে নিশ্চিত আন্তর্জাতিক সংস্থা
‘মার্চ ফর ইন্ডিয়ান মুসলিম’: প্রতিবেশী নির্যাতনে বাংলাদেশে নিন্দা-প্রতিবাদ
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না