উত্তরা, আগারগাঁও ও কচুক্ষেতে ‘জোরপূর্বক গুম’ তদন্তে নিশ্চিত আন্তর্জাতিক সংস্থা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা বলপ্রয়োগে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে র‌্যাব ও সেনা গোয়েন্দা সংস্থার কিছু সদস্যদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে। রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ সদর দপ্তর, আগারগাঁওয়ে র‌্যাব-২-এর সিপিসি ইউনিট এবং ঢাকা সেনানিবাসের কচুক্ষেতে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি)–তে এসব কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রসিকিউশন।

রোববার ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানিকালে এসব তথ্য জানান আইসিটি’র চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০টি জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ২০০টি অভিযোগের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে প্রসিকিউশন দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার আগামী ২৪ জুন পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, এই মামলার তদন্তে চারটি গোপন ডিটেনশন সেন্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কচুক্ষেতের জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল। সেখানে গুমের কাজে ব্যবহৃত নানা উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা ও মৃতদেহ সরিয়ে ফেলার পদ্ধতির বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মামলার শুরুতেই অভিযুক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। এর মধ্যে একমাত্র গ্রেফতার হচ্ছেন এনটিএমসি’র সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান। আজ শুনানির সময় তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, শত শত গুমের ঘটনার তদন্ত একত্রে করা হচ্ছে। আলাদা আলাদাভাবে মামলাগুলো তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি চলছে। শিগগিরই কয়েকটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সূত্র: বাসস