প্রায় ১৫ বছর পর আবারও বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ সভা (এফওসি)। আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নিতে বুধবার ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন। এফওসিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হুসেন খান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন বিরতির পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। যদিও নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়নি, তবে বৈঠকে বাণিজ্য, আঞ্চলিক সহযোগিতা, সরাসরি বিমান যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাকিস্তান ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী উল্লেখ করে হাইকমিশনার ইকবাল হুসেন খান বলেন, “তাদের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য বাংলাদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান তুলা রপ্তানিতে আগ্রহী।”
তিনি জানান, আফগানিস্তান ও ইরান হয়ে পণ্য প্রবেশে পাকিস্তান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে, যা বাংলাদেশকে কম খরচে আমদানির সুযোগ দিতে পারে।
বৈঠকে পরিবহন ও সরাসরি বিমান যোগাযোগ ইস্যুও গুরুত্ব পাবে। হাইকমিশনার জানান, পাকিস্তানের দুইটি বেসরকারি বিমান সংস্থা—ফ্লাই জিন্নাহ ও এয়ার সিয়াল—ঢাকায় ফ্লাইট চালুর জন্য বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামী দুই মাসের মধ্যেই এয়ার সিয়াল ফ্লাইট চালু করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “বিমান সংযোগ চালু হলে পর্যটন ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।”
এদিকে, দুই দেশের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ঐতিহাসিক ইস্যু প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, “বিশ্বের অনেক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেই এ ধরনের বিষয় থাকে, তবে তা বর্তমান সহযোগিতার পথকে আটকে রাখা উচিত নয়।”
এফওসি বৈঠকের পাশাপাশি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এ ছাড়া চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। সফরটি চূড়ান্ত হলে ২০১২ সালের পর এটিই হবে বাংলাদেশে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সর্বশেষ এফওসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। প্রায় দেড় দশক পর ফের সচিব পর্যায়ের এই বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক মহল।
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে ক্ষোভ নয়াদিল্লির, বলল ‘কিছু ঘটনা ভুলে যেও না’
আত্ম উপলব্ধিতে বিএনপি-জামায়াত, ভারতের পুরনো শর্ত ফের আলোচনায়
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক আলোচনা: সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন?
রাশিয়াকে থামাতে কঠোর পদক্ষেপের ডাক দিলেন ম্যাক্রোঁ
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না