বাংলাদেশের কাছে সামরিক অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। আগামী ১৫ মে টোকিওতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-জাপান ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন, আর জাপানের পক্ষে নেতৃত্বে থাকবেন দেশটির সিনিয়র ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার আকাহরি তাকিশি। এফওসি বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, মিয়ানমার-রোহিঙ্গা সংকট, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং জনভিত্তিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে ইতিবাচক। এবারের আলোচনায় প্রাধান্য পাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফরও। আগামী ২৯ থেকে ৩১ মে টোকিও ও ওসাকায় তিন দিনের সফর করবেন প্রধান উপদেষ্টা, যেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপান এতদিন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবসম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিলেও এবার তারা সামরিক পণ্য রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী হয়েছে। বিশেষ করে এশীয় অঞ্চলে নতুন বাজার খুঁজতে বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে টোকিও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এফওসি বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তোলা হবে।
তবে বাংলাদেশ অস্ত্র কিনবে কি না, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত সময়সাপেক্ষ এবং উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত হবে।
চীন ইস্যুতে অস্বস্তিতে জাপান
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক সম্প্রতি ঘনিষ্ঠ হওয়ায় উদ্বিগ্ন জাপান। বিশেষ করে গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চীন নিয়ে আলোচনাও এফওসি বৈঠকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকের আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজের আগেই চীন-সম্পর্কিত আলোচনায় প্রবেশ করবে দুই পক্ষ। এরই মধ্যে এফওসি বৈঠকের প্রস্তুতিস্বরূপ ঢাকায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে জাপানের সামরিক প্রস্তাবসহ আলোচ্য এজেন্ডা নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়েছে।