ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মত দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত ‘পরামর্শক কমিটি’ পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে শিক্ষার্থীদের এই মত উঠে এসেছে। মাত্র ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী এই নির্বাচনকে অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালনায় ২৩ মার্চ শুরু হয়ে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলা এই জরিপে মোট ১,৭৪৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ই-মেইলের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক প্রোফাইলে লগইন করে উত্তর দিয়েছেন।
জরিপ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশ মনে করেন, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে। ১৬ শতাংশ সেপ্টেম্বরের মধ্যে, আর ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, এক বছর বা তারও পরে নির্বাচন হলেও তা গ্রহণযোগ্য হবে।
শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এছাড়া, ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোটগ্রহণ ও গণনা সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, ছাত্র সংগঠনগুলোর পূর্ব সম্মতি ও সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
ভোটকেন্দ্র কোথায় স্থাপন হবে—এ সংক্রান্ত প্রশ্নে, ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট কিছু একাডেমিক ভবন যেমন কার্জন হল, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও কলা অনুষদকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে দেখতে চান। ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী একাডেমিক ভবন ও হল উভয় জায়গায় ভোট গ্রহণের পক্ষে, আর ১৭ শতাংশ শুধুমাত্র হলে ভোট গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন।
প্রার্থিতা নির্ধারণে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছেন, প্রার্থিতা জমাদানের দিন থেকে কমপক্ষে এক বছর বৈধ ছাত্রত্ব থাকা আবশ্যক। অন্যান্যের মধ্যে কেউ কেউ সিজিপিএ, নির্দিষ্ট বয়সসীমা ও অপরাধমুক্ত থাকার মতো শর্তের পক্ষে মত দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে, ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী ছাত্র-শিক্ষক যৌথভাবে কমিশন গঠনের পক্ষে মত দেন। কিছু শিক্ষার্থী প্রশাসনের মাধ্যমে অথবা বাইরের নিরপেক্ষ সংগঠন দ্বারা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) এবং পরামর্শক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, “ডাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত অত্যন্ত জরুরি। জরিপে শিক্ষার্থীদের মতামত বিশ্লেষণ করে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে দেব, যাতে তারা প্রাসঙ্গিক সুপারিশ গ্রহণ করতে পারেন।”
এই জরিপের ফলাফলকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ডাকসু নির্বাচনের আলোচনা নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর থাকা এই ছাত্র সংসদকে পুনর্জীবিত করতে এবার শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সংগৃহিত প্রতিবেদন
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, হল খুলছে ২ মে
‘দফা এক দাবি এক, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ’—স্লোগানে মুখর জাবি ক্যাম্পাস
শিক্ষা উপদেষ্টার অনুরোধেও অনশন থেকে সরেনি শিক্ষার্থীরা
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা
মন্তব্য করুন
আপনার ইমেল প্রকাশ করা হবে না